মানিকগঞ্জে ভুয়া ডাক্তার সেজে রোগীদের সাথে প্রতারণা, জরিমানা ২ লাখ টাকা

ভুয়া ডাক্তার প্রমোদ চক্রবর্তী ও তার ভিজিটিং কার্ড

কড়চা রিপোর্টঃ এমবিবিএস ডাক্তার সেজে রোগীদের সাথে প্রতারণা করে আসছিলেন মানিকগঞ্জের খাগড়াকুড়ি গ্রামের প্রমোদ চক্রবর্তী নামের এক প্রতারক। ভিজিটিং কার্ড ও রোগী দেখার ব্যবস্থাপত্রে এমবিবিএস, পিজিটি (সার্জারি), মা ও শিশু রোগে অভিজ্ঞ, মেডিকেল অফিসার, বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল লিখে চিকিৎসা দিতেন মানিকগঞ্জ ও সাভারের বিভিন্ন স্থানে।

বৃহস্পতিবার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ওই প্রতারককে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেন। রানা হোসেন নামের এক ব্যক্তির অভিযোগের প্রেক্ষিতেই ওই ভুয়া ডাক্তারকে জরিমানা করা হয়।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, এমবিবিএস পদবী ব্যবহার করে প্রমোদ চক্রবর্তী মানিকগঞ্জের সুপার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সিংগাইরের বাস্তা ও সাহরাইল এর ফার্মেসীতে, সাভার আধুনিক হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়মিত রোগী দেখতেন। স্থানভেদে তিনি রোগীদের কাছ থেকে ভিজিট নিতেন ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা । নিজের হাতেই করতেন অপারেশন।

রোগীকে দেওয়া ব্যবস্থাপত্র

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের জেলা সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান রুমেল জানান, দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেয়া ও প্রতারণার শিকার রানা হোসেন নামের এক ব্যক্তি ১ জুলাই ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্ত ও শুনানি শেষে অভিযুক্ত নামধারী ডা. প্রমোদ চক্রবর্তীকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন এর ৪৪ ধারায় দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

তিনি আরো বলেন, ব্যবস্থাপত্রে ব্যবহৃত পদবীর স্বপক্ষে কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেন নি অভিযুক্ত ওই ডাক্তার। প্রমোদ চক্রবর্তী স্বীকার করেন, কোলকাতা থেকে এগার ক্লাস পাস করে Alternative Medicine বিষয়ে কোর্স করেন। কিন্তু বিএমডিসির কোন রেজিস্ট্রেশন তার নেই। ডাক্তার পদবী, এম বি বি এস (ঢাকা), পিজিটি (সার্জারি), মেডিকেল অফিসার, মা ও শিশু রোগে অভিজ্ঞ ইত্যাদি খেতাব ব্যবহার করে এতদিন তিনি প্রতারণা করে আসছিলেন। ভবিষ্যতে তিনি আর এই ধরনের প্রতারণা করবেন না মর্মে মুচলেকা প্রদান করেন।

এব্যাপারে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস জানান, এমবিবিএস পদবী ব্যবহার করে প্রমোদ চক্রবর্তী সাধারণ রোগীদের সাথে প্রতারণা করে আসছিলেন। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর তাকে অর্থদন্ড প্রদান করেছে। সেই সাথে ভোক্তা অধিকার আইন মোতাবেক আরোপিত জরিমানার ২৫% হিসেবে ৫০,০০০ টাকা অভিযোগকারীকে প্রদান করা হয়েছে।

এদিকে, রানা হোসেন নামের ওই ব্যক্তি ৩ জুলাই প্রমোদ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে প্রতারণার বিষয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন ( নং-১৩৬৮)। এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি মোঃ রকিবুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অভিযোগের তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Facebook Comments Box
ভাগ