কড়চা রিপোর্ট : মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় ইছামতী নদীতে ভাঙন রোধে ফেলা হচ্ছে জিওব্যাগ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে উপজেলার ঘিওর সদর ইউনিয়নের রসুলপুর, কুস্তা বন্দও ও ঘিওর গরু হাট এলাকায় এসব জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। তবে স্থানীয়দের দাবি, জিও ব্যাগ ফেলে সাময়িকভাবে ভাঙন রোধ করা গেলেও তা স্থায়ী সমাধান নয়। এজন্য প্রয়োজন স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের।
সরেজমিন দেখা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডেও ঠিকাদারদের মাধ্যমে প্রায় ২২ হাজার জিও ব্যাগ ফেলার কাজ পুরোদমে চলছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকার একটি প্রকল্প হাতে সেওয়া হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে এই জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তদারকিতে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলার ব্যবস্থা করেছেন মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয়।
স্থানীয়রা জানান, এক সপ্তাহের ভাঙ্গনে অর্ধশত বসত বাড়ি এবং ঘিওর গরু হাটের ৮০ ভাগ জমি বিলীন হয়ে যায়। এ ছাড়া কুস্তা, রামকান্তপুর, রসুলপুর এবং গোলাপনগরের কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাস্তা, ২টি ব্রীজসহ বহু বাড়ি-ঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হুমকির মধ্যে রয়েছে। ভাঙ্গন কবলিত এলাকার লোকজন আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছে। আতংকে রয়েছে এলাকার বহু লোকজন।
স্থানীয়রা জানান, নদী ভাঙন এ এলাকায় প্রতি বছরই হয়। মানুষরা অসহায় হয়ে পড়ে। নদীতে যখন পানি থাকে না, তখন ভাঙন রোধে প্রস্তুতি নিয়ে কিছুটা হলেও ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। ভরা নদীর স্রোতে এসব বস্তা থাকবে না। প্রয়োজন স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের।
তারা আরো জানান, সরকারীভাবে প্রকল্পভুক্ত পুরাতন ধলেশ্বরী নদী খনন কাজ করার পর পানির স্রোত বৃদ্ধি পায়। উপজেলার বড়টিয়া, হিজুলিয়া ও ঠাকুরকান্দি এলাকায় নদীর এই খনন করা হয়েছে। খননের ত্রিমুখের পানির স্রোত ধলেশ্বরীর উৎস মোহনা হয়ে ইছামতি নদীতে গড়িয়ে আসছে। এরই ফলশ্রুতিতে এই ভাঙন দেখা দিয়েছে। এব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা এবং জনপ্রতিনিধিরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার জানালেও ভাঙনের প্রাথমিক পর্যায়ে কাজ শুরু করেন নি। এখন ভাঙন তীব্রতর রূপ নেয়ার পর জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করেছেন।
ঘিওর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অহিদুল ইসলাম বলেন, নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তায় তালিকা করা হয়েছে। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্থরা সাহায্যের পরিবর্তে ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধান চান। এখন ভাঙন রোধে ভরা নদীতে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে নদী ভাঙন রোধে বাঁধ দিলে নদীর পাড়ের বাসিন্দাদের অনেক উপকার হবে।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হামিদুর রহমান বলেন, উপজেলার সম্ভাব্য ভাঙন কবলিত এলাকার নাম উল্লেখ করে জুন ও আগস্ট মাসে পানি উন্নয়ন বোর্ড বরাবর আবেদন করি। এরপর স্থানীয় এমপি মহোদয়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় রসুলপুর, কুস্তা বন্দও ও ঘিওর গরু হাট এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করেছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে পুরোদমে মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড এই ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় ২২ হাজার জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করেছে। কাজগুলো শেষ হলে ভাঙন থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকাসমূহ রক্ষা পাবে।
মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমান দুর্জয় মুঠোফোনে জানান, ভাঙ্গন কবলিত এলাকার লোকজনের জন্য সরকারিভাবে সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ভাঙন রোধে সংশ্লিষ্টদের জরুরি ভিত্তিতে কাজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
কড়চা/ এ আর