আজকের নারী-পুরুষের সমতায় আগামীর টেকসই উন্নয়ন
রুহুল ইসলাম টিপু
০৮ মার্চ ২০২২ বিশ্ব নারী দিবস। এ বছরের থিম-Gender Equality Today for a Sustainable Tomorrow. আজকের নারী-পুরুষের সমতায় আগামীর টেকসই উন্নয়ন। বিগত বছর বিশ্ব নারী দিবসের স্লোগান ছিল নেতৃত্বে নারী করোনার পৃথিবীতে সমতার ভবিষ্যত। নারী দিবসের মূল বার্তা নারী-পুরুষের সমতা। সমতার সংগ্রাম, সমতার আন্দোলন। মানব হয়েও প্রতি লিঙ্গের সাথে প্রতিযোগিতা। সম অধিকার আদায়। মানবী মানব এক কাতারে এক সাথে চলার স্বাধীনতা। নারীর মৌলিক সমান অধিকার বাস্তবায়নের অঙ্গীকার। এ এক পাহাড় সম বাধা অতিক্রম। নারী নর এর সমতায় বিশ্ব লাভ করবে উন্নয়নের স্থায়ীত্ব।
আমাদের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় আইন মহান সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদে উল্লেখ আছে যে, ‘সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী।’ ২৮(১) অনুচ্ছেদে রয়েছে, ‘কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষভেদে বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করিবেন না।’ ২৮(২) অনুচ্ছেদে রয়েছে, রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী পুরুষের সমান অধিকার লাভ করিবেন।’ ২৮(৩) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ নারী পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে জনসাধারণের কোন বিনোদন বা বিশ্রামের স্থানে প্রবেশের কিংবা কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির বিষয়ে কোন নাগরিককে কোনরূপ অক্ষমতা, বাধ্যবাধকতা, বাধা বা শর্তের অধীন করা যাইবে না।’ ২৮(৪)-এ উল্লেখ রয়েছে যে, ‘নারী বা শিশুদের অনুকূলে কিংবা নাগরিকদের যে কোন অনগ্রসর অংশের অগ্রগতির জন্য বিশেষ বিধান প্রণয়ন হইতে এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুই রাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করিবে না।’২৯(১)-এ রয়েছে, ‘প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ লাভের ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা থাকিবে।’ ২৯(২)-এ আছে, ‘কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ নারীপুরুষ ভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিক প্রজাতন্ত্রের কর্মের নিয়োগ বা পদলাভের অযোগ্য হইবেন না কিংবা সেই ক্ষেত্রে তাঁহার প্রতি বৈষম্য প্রদর্শন করা যাইবে না।’৬৫(৩) অনুচ্ছেদে নারীর জন্য জাতীয় সংসদে ৫০টি আসন সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। ৯ অনুচ্ছেদের অধীনে স্থানীয় শাসন সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান সমূহের উন্নয়নে নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হয়েছে। অর্থ্যাৎ স্থানীয় সরকারের সকল পর্যায়ে নারীর জন্য সংরক্ষিত আসনে নির্বাচনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। নারীর সরাসরি স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ের সকল নির্বাচনে অংশগ্রহণের অবাধ সুযোগও নিশ্চিত করা হয়। এক্ষেত্রে সকল রাজনৈতিক দলসমূহের সকল পর্যায়ে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধিকরণের প্রচেষ্টা তেমনভাবে লক্ষ্যণীয় নয়। সমতার সংগ্রামে আমাদের এক্ষেত্রে বড় একটি বেগ পেতে হচ্ছে।
নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ কনভেনশন সবচেয়ে ব্যাপক ও আইনগতভাবে অবশ্য পালনীয় নারীর মানবাধিকার। ১৯৭৯ সালের ১৮ ডিসেম্বরে Convention on the Elimination of all forms of Discrimination Against Women (CEDAW) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ কর্তৃক গৃহীত হয়। ১৯৮১ সালের ০৩ সেপ্টেম্বর কনভেশনটি কার্যকারিতা লাভ করে। নারীর আন্তর্জাতিক বিল অব রাইটস হিসেবে অভিহিত এই কনভেনশন বৈষম্যের অবসানে জাতীয় পর্যায়ে ব্যবস্থা গ্রহণের একটি এজেন্ডা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। কনভেনশনের শর্তানুযায়ী রাষ্ট্রসমূহের প্রতি নারীর মৌলিক মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা; নারী পাচার ও পতিতাবৃত্তিতে নারীর শোষণ রোধ নিশ্চিত করা; রাজনৈতিক ও লোকজীবনে নারীর প্রতি বৈষম্যের অবসান; জাতীয়তা অর্জন, পরিবর্তন বা বহাল রাখার সমান অধিকার নিশ্চিত করা; শিক্ষা, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য এবং অর্থনৈতিক ও সমাজ জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রে বৈষম্যের অবসান ঘটানোর জন্যে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে। অন্যান্য ধারায় গ্রামীণ নারীর সমস্যা, আইনের দৃষ্টিতে সমতা এবং বিবাহ ও পারিবারিক জীবনে নারীর প্রতি বৈষম্যের অবসান সংক্রান্ত বিষয়গুলো রয়েছে। কনভেনশনে নারীর নিজ নিজ দেশে রাজনৈতিক ও লোকজীবনে অংশগ্রহণ এবং সরকারের সকল পর্যায়ে সকল কাজ করার অধিকারও নিশ্চিত করা হয়েছে। কনভেনশনের ধারা ১-এ নারীর প্রতি বৈষম্যের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, ‘বৈবাহিক মর্যাদা নির্বিশেষে নারী ও পুরুষের সমতার ভিত্তিতে মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, নাগরিক বা অপর যে কোন মৌলিক স্বাধীনতার ক্ষেত্রে নারীর স্বীকৃতি, ভোগ বা প্রয়োগকে ব্যাহত বা অকার্যকর করা।’
১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ চারটি ধারায় [১, ১৩(ক), ১৬(ক) ও (চ)] সংরক্ষণসহ এ সনদ অনুসমর্থন করে। ১৯৯৬ সালে ধারা ১৩(ক) এবং ১৬.১ (চ) থেকে সংরক্ষণ প্রত্যাহার করা হয়। আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে প্রায় সকল ফোরামে বাংলাদেশ নারীর সম অধিকার প্রতিষ্ঠায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। আন্তর্জাতিক সনদ ও দলিলসমূহে স্বাক্ষরের মাধ্যমে নারী উন্নয়নে বিশ্ব ভাবধারার সাথে সম্পৃক্ততা অক্ষুন্ন রেখে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ২০০০ সালে Optional Protocol on CEDAW-তে বাংলাদেশ স্বাক্ষর করে। গুরুত্বপূর্ণ এই সনদে স্বাক্ষরকারী প্রথম ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। এছাড়াও আঞ্চলিক পর্যায়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সনদে বাংলাদেশ স্বাক্ষরকারী ও অনুসমর্থনকারী রাষ্ট্র হিসেবে নারী উন্নয়নের ক্ষেত্রে বহুমুখী ব্যবস্থা গ্রহণে দেশের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে।
আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে নারীরাও রেখেছেন অসামান্য অবদান। স্বামী-সন্তানকে মুক্তিযুদ্ধে পাঠিয়ে মায়েরা রাখেন বিশাল দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগের নিদর্শন। লক্ষাধিক মা-বোন সম্ভ্রম হারিয়েছেন। মানবাধিকার লঙ্ঘনের জঘন্যতম অপরাধ সংঘটিত হয় মুক্তিযুদ্ধে। বিশ্ববাসী দেখেছেন আমাদের মা-বোনদের সম্ভ্রম এবং জীবনহানি। গণহত্যার শিকার আমাদের মা-বোন। দেশের জন্য লক্ষাধিক নারী নিজ জীবন উৎকর্ষ করেন। রাষ্ট্র মা-বোনদের আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ রাখার জন্য ‘বীরাঙ্গনা’ উপাধিতে ভূষিত করে। বাংলাদেশ ৫১তম বর্ষে এসেও আজকের মা-বোনদের নারী-পুরুষের অসমতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে হচ্ছে। জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১-এ দারিদ্র্য প্রতিপাদ্যে দেখা যায়, দেশের শতকরা ৪০ ভাগ দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর মধ্যে দুই তৃতীয়াংশই নারী এবং এর মাঝে নারী প্রধান পরিবারের সংখ্যা অধিক। এ পরিসংখ্যানটির বেশ অনেক উন্নতি হয়েছে। তবে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বড় অংশ নারীকে নীচে রেখে নারী দিবস আমরা উদযাপন করি। এটি আমাদের লজ্জা। অর্ধ শতাব্দী অতিক্রমকারী বাংলাদেশের জন্য বেমানান। অথচ এই আমরাই সহস্ররাব্দ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশ বিশ্বে সাফল্যের রোল মডেল। এমডিজি’তে সাফল্যের স্বীকৃতস্বরূপ বাংলাদেশ ছয় ছয়টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করে।
‘সুদের টাকার জন্য গাছে বেঁধে মা-মেয়েকে নির্যাতন।’ গত বছর ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ এ প্রথম আলো প্রকাশিত সংবাদের একটি শিরোনাম। ধর্ষন, খুন, হত্যা, নারীর প্রতি বিভিন্ন ধরনে সহিংসতার চিত্র প্রতিদিন সংবাপত্রে উঠে আসে। প্রকাশিত সংবাদের আড়ালে পড়ে থাকে আরও কত কত নৃসংশতা। আমরা করোনাকালীন এবং করোনা পরবর্তী বাল্য বিবাহের সংখ্যাবৃদ্ধিতে আতঙ্কিত। নারী দিবসে এসব লুকিয়ে রাখার কোন বিষয় নয়। আমরা টেকসই উন্নয়ন অভিষ্টের সপ্তম বর্ষ পার করছি। অভিষ্টের ৫ নম্বরে রয়েছে নারী-পুরুষের সমতা। এতে বলা হয়েছে, সর্বক্ষেত্রে নারীদের ওপর সবধরণের বৈষম্য দূর করা। ঘরের ভেতরে কিংবা বাইরে নারীদের ওপর সবধরনের সহিংসতা পরিহার করা। নারী পাচার ও যৌন নিপীড়নসহ সব ধরণের নির্যাতন বন্ধ করা। বাল্যবিবাহ, জোরপূর্বক বিবাহসহ সব ধরনের ক্ষতিকারক চর্চা পরিহার করা। সরকারি সেবা, অবকাঠামো ও সামাজিক নিরাপত্তা নীতিমালার মাধ্যমে অবৈতনিক ও গৃহস্থালি কাজের স্বীকৃতি ও মূল্যায়ন করা। পরিবার ও পারিবারিক দায়িত্ব বন্টনের বিষয়টি জাতীয় পর্যায়ে উপযুক্ত করে তুলে ধরা। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও জনজীবনে নেতৃত্ব ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে পূর্ণ ও কার্যকরভাবে নারীর অংশগ্রহণ ও সমান অধিকার নিশ্চিত করা। আইসিপিডি’র প্রোগ্রাম অব অ্যাকশন এবং বেইজিং প্লাটফর্ম অব অ্যাকশনের সমঝোতা অনুযায়ী যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যের অধিকারে নারীদের সার্বজনীন প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা। নারীর সমান অধিকার নিশ্চিত করতে জাতীয় পর্যায়ে অর্থনৈতিক সম্পদ, সম্পত্তির উপর অধিকার ও নিয়ন্ত্রণ, আর্থিক সেবা, ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ বিষয়ে সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নেয়া। নারীর ক্ষমতায়নে প্রযুক্তি-বিশেষ করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো। সর্বক্ষেত্রে লিঙ্গ সমতা ও নারীর ক্ষমতায়নে নীতিমালা ও আইন প্রণয়ন এবং প্রয়োগ জোরদার করা।
আমার জন্ম এক নারীর পেটে। তিনি আমার মা। মা ছাড়া পৃথিবীর আলো দেখা সম্ভব নয়। আমার স্ত্রী এবং তিন কন্যা। তারাও নারী। আমার বড় মেয়ে প্রতিবন্ধিতার শিকার, তিনি অটিজমে আক্রান্ত। ১৯৪৮ সালের সার্বজনীন মানবাধিকার সনদে সকল মানবের অধিকার রক্ষায় রাষ্ট্রসমূহের অঙ্গীকারের অনুস্বাক্ষর রয়েছে। শিশুদের বিশেষ মর্যাদা দিয়ে অধিকার বাস্তবায়নে রাষ্ট্রসংঘ শিশু অধিকার সনদ এর আলোকে নিজ নিজ দেশে আইন নীতি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। রয়েছে প্রতিবন্ধী সুরক্ষা আইন। অটিস্টিক শিশুদের জন্য বিশেষ আইনী ব্যবস্থা। শিক্ষার অধিকার নাগরিক অধিকার চিকিৎসা পুনর্বাসনসহ রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা। আমি জানি আমার অটিস্টিক কন্যা সন্তানসহ অজস্র নারী এ সকল অধিকারসমূহ হতে আজ অনেক দূরে অবস্থান করে।
নারীর সমস্যা, আমি ঘর হতেই উপলব্ধি করি। সে আলোকেই সমাজে আমার অংশগ্রহণ। রাষ্ট্রের সর্বস্তরে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। নারীর অংশগ্রহণ এবং নেতৃত্ব ব্যতীত আমরা অচল, সমাজ এবং রাষ্ট্র নিস্ক্রিয়। সমাজ এবং দেশের উন্নয়নে নারীর সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি ব্যতিত অন্য কোন পথ নেই। এসডিজি-৫ নারী পুরুষের সমতা বাস্তবায়নে ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় গৃহীত অভীষ্ট হচ্ছে: ২০-২৪ বছর বয়সি নারী শিক্ষার্থী ও পুরুষ শিক্ষার্থীর হারে সমতা আনয়ন। সরকারি চাকরিতে ৯ম ও তদুর্ধ গ্রেডে নারী কর্মকর্তার অন্তর্ভুক্তি ২৫ শতাংশে উন্নীতকরণ। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের মোট ১৭ টি অভীষ্ট এবং ১৬১ টি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত। এ আলোকে কিছু মোটা দাগের লক্ষ্য মাত্রা উল্লেখ করতে চাই। যেমন: দারিদ্র ৯.৭ শতাংশে এবং হত দরিদ্র্যের সংখ্যা ৩ শতাংশের নীচে চলে আসবে; শিশুমৃত্যুর হার কমে ১৮১ থেকে ৭০ এ উন্নীত হবে (প্রতি ১ লক্ষ জীবিত জন্ম); অপুষ্টির ব্যাপকতা ১৬.৪ শতাংশ থেকে হ্রাস পাবে ১০ শতাংশ বা তার চেয়ে কম; অনুর্ধ্ব ৫ বছর বয়সের শিশুদের খর্বিত বিকাশ ৩৬.১ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশে হ্রাস পাবে; প্রসবকালকালে দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীর উপস্থিতি ৪২.১ শতাংশ থেকে বাড়বে ৮০ শতাংশে; শতভাগ জন্মনিবন্ধন (২০১২-১৩ সালে ৩৭ শতাংশ); কিশোরী মায়ের সংখ্যা হবে প্রতি হাজারে ৫০, এখন এই সংখ্যা প্রতি হাজারে ৭০; শতভাগ শিশু ইমুনাইজেশন সুবিধা পাবে (৭৮ শতাংশ ছিল ২০১৪ সালে); ১৫ বছরের কম বয়সি বিবাহিত মেয়ের সংখ্যা নেমে আসবে শূণ্যের কোটায় (২০১২-১৩ সালে ছিল ২৩.৮ শতাংশ), ২০-২৪ বছর বয়সের মধ্যে বিবাহিত নারীর সংখ্যা ১০ শতাংশে হ্রাস পাবে। যদিও করোনা বাল্য বিবাহ নিয়ে আমাদের বড় একটি বাধা’র মধ্যে ফেলে দিয়েছে। সরকার কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনে নিশ্চিত আশানুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে- এ দাবি আমাদের সকলের।
দেশের সকলের প্রতি অনুরোধ আসুন, আমরা নারীর মর্যাদা বাড়ানোর ক্ষেত্রে পরিবারের ভূমিকা শক্তিশালী; সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে নারী শিশুর সচেতনতা বৃদ্ধি; নারী শিশুর বিরুদ্ধে সহিংসতা নির্মূল; শিশু শ্রমভিত্তিক অর্থনৈতিক শোষণ দূর এবং কর্মজীবী তরুণীদের নিরাপত্তা প্রদান; স্বাস্থ্য ও পুষ্টির ক্ষেত্রে নারীদের প্রতি বৈষম্য বিলোপ; শিক্ষা, দক্ষতার উন্নয়ন এবং প্রশিক্ষণে নারীদের প্রতি বৈষম্য বিলোপ; নারী সন্তানের অধিকার উন্নত ও নিরাপদ এবং তার চাহিদা ও সম্ভাবনা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি; নারীদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও তৎপরতা বিলোপ; নারী শিশুর বিরুদ্ধে সব ধরনের বৈষম্য বিলোপ; সকল মানবাধিকার ব্যবস্থা বিশেষভাবে নারীর বিরুদ্ধে সব ধরনের বৈষম্য বিলোপ সংক্রান্ত কনভেনশনের পূর্ণ বাস্তবায়নের মাধ্যমে নারীর মর্যাদা রক্ষা ও উন্নত করি। মুক্তিযোদ্ধাদের বাংলাদেশ সাফল্য অর্জন করবেই। নারীর প্রতি মর্যাদা এবং সম্মানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন। নারীর অধিকার মানবাধিকার নিশ্চিত হোক। বিশ্ব নারী দিবস সফল হোক।
কড়চা/ আর আই টি