আজ একুশে জুলাই, তাহের দিবস
মধুসূদন সাহা
‘মাটি ভিজে যায় রক্তে
আর একজন কর্নেল তাহের
পৃথিবীর সমান বয়সী স্বপ্ন নিয়ে
আলিঙ্গন করেন ফাঁসির রজ্জু।।’
১৯৭৬ এর ২১ জুলাইয়ের প্রভাতে সূর্যের রঙ ছিল রক্তিম। অশ্রু হয়ে ঝড়ে পড়েছিল পদ্মা, মেঘনা ও যমুনার জল। ক্ষোভের বিস্ফোরণে কম্পিত হয়েছিল আকাশ আর মুক্তিকামী বাঙালির হৃদয়। আর একজন সামরিক জেনারেলের বিশ্বাসঘাতকতা ও ক্ষমতার উদগ্র বাসনায় ফাঁসিতে হত্যা করা হলো আজীবন গণমানুষের মুক্তির স্বপ্নদেখা, যুদ্ধে পা হারানো বীর মুক্তিযোদ্ধা বীরোত্তম কর্নেল তাহেরকে।
বাঙালির বীরত্বের পাশাপাশি এই বিশ্বাসঘাতকতার লজ্জাও চলমান। যদিও এর বিনাশের ধারাবাহিকতাও বিদ্যমান। এ লজ্জা ছিল পলাশীর প্রান্তরে, এ লজ্জা ছিল একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে, এ লজ্জা ছিল ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট। আর এ লজ্জায় সভ্যতা মুখ ঢেকেছে ৭৬ এর একুশ জুলাই কর্নেল তাহেরের ফাঁসিতে।
মৃত্যু বা ফাঁসি মানুষকে মহান করে না। মানুষের মূল্যায়ন তার কর্মে। এই স্বল্প পরিসরে কর্নেল তাহেরের কাজের মূল্যায়ন করা না গেলেও শুধু এটুকু বলতে চাই আজীবন গণমানুষের চূড়ান্ত মুক্তির স্বপ্ন দেখা এক বিপ্লবী। যার চিন্তা চেতনা ও কাজে বৈপরীত্য ছিল না। শৈশব থেকে নিজ হাতে ফাঁসির রজ্জু গলায় পরা পর্যন্ত যার চিন্তা ও কাজে বিন্দুমাত্র বৈপরীত্য ঘটেনি। এখানেই তিনি মহান। যার উদাহরন বাঙালির ইতিহাসে বিরল।
তাই সবার কাছে অনুরোধ, একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে কর্নেল তাহেরের ইতিহাসটা জানার জন্য হলেও পড়ুন, ভাবুন, মূল্যায়ন করুন। তারপর নির্ধারন করুন করনীয়। গল্পের চেয়েও রোমাঞ্চকর ও হৃদয়বিদারক সে কাহিনী। আপনার হৃদয়ে কড়া নাড়বেই বলে বিশ্বাস করি।
কর্নেল তাহের-লাল সালাম।
কড়চা/ এম এস