জন্ম সকল
প্রতিমা রায়বিশ্বাস
আমার আয়ুর প্রদীপ নিভলে ভেবো ফুটবে একটি পাতা।
হৃদয় আমার জ্বালবে যখন চিতা
ডিমের খোলস ভেঙে তখন ফুটবে একটি মাছ
চোখ ভরা এ জলের ভিতর কাটবে জীবন সাঁতার।
আমার একা, আমার ভাবা, আমার চলা, বলার ভিতর
বইবে উহ্য বাতাস। তখন আমি ফাঁকা।
শূন্য যেমন আকাশ রাখে, মেঘের ওড়না বিছায় কালো সাদা।
বিদ্যুৎ রঙা মনটি যখন ঝিলিক।
মৃত্তিকা কি পায় সে বলো হৃদয়?
নইলে আগুন এত কোথায় মেশে
যায় সে কোথায় চিহ্ন সকল মুছে?
যদি আমি না হই শামুক, না হই শালুক,
পতঙ্গ ওই মাটির ভিতর
নইলে কে আর আমি ‘এত একা’র শেষে?
যখন আমার বুকটি নিভে অঙ্গার।
পাতার ফাঁকে ফুটবে একটি রঙিন ফুলের বাহার।
শিশুর মত উৎসুকী সে, সবুজ যে তার মা;
আগলে রাখা বুকের সাথে সুগন্ধি আমি পাখির সুরে।
দুলবে বাতাস, বইবে বাতাস প্রশ্বাসী বুক ভ’রে।
আবার জীবন রঙিন এবার, সূর্যস্রোতের ফোয়ার জলে,
ভিজতে গেলে, হৃদয় আমার নাচে।
আমার জীবন একটি যদি দিন;
পশ্চিম দিক যে তখন আমার আছে।
ডুবতে হবে, নিভতে হবে, বাতাস রেখে গাছে।
আমার আয়ুর আলো নিভলে পুজোর ঘরে
হৃদয় আমার জ্বলবে তখন মৃদু প্রদীপ শিখায়।
আত্মা তখন ফুলের রঙে, ঈশ্বরী আর রাখবে চরণ পেতে
তর্পন ডালায় উঠব আমি আবার একা হেসে।
আমার একার। বিষাদ ভেলা। ভাসবে বেহুলা সঙ্গীতে।