করোনা সময়, সিংগাইরে কিন্ডারগার্টেন শিক্ষকদের মানবেতর জীবনযাপন

মাসুম বাদশাহঃ চলমান করোনা পরিস্থিতিতে সারা দেশের ন্যায় মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার কিন্ডার গার্টেন স্কুলগুলো বন্ধ থাকায় অর্থের অভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। এ অবস্থায় ধার-দেনা করে কোনো মতে সংসার চালাচ্ছেন তারা। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুলগুলো দ্রুত খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিংগাইর উপজেলায় ১০৪ টি কিন্ডারগার্টেন (কেজি) স্কুল রয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ২ হাজার ২’শ জন শিক্ষক-কর্মচারী ওইসব স্কুলের সঙ্গে জড়িত। কোভিড-১৯ সংক্রমণ ঠেকাতে ও শিশু স্বাস্থ্য নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে গত ২৬ মার্চ থেকে সরকার দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেন। সে থেকে কয়েক দফায় এই মেয়াদ বাড়ানো হয় । সর্বশেষ ৩১ আগস্ট পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হলে হতাশায় পড়েন ওইসব বে-সরকারি স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীরা। প্রায় পাঁচ মাস ধরে প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন না পাওয়ায় ধার-দেনা করে কোনো রকমে চলছেন তারা। সামান্য বেতনের পাশাপাশি প্রাইভেট পড়িয়ে বাড়তি উপার্জনের পথও বন্ধ হয়ে গেছে।

সিংগাইর এ কাদের ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের পরিচালক বদরুল আলম কিবরিয়া বলেন, কিন্ডারগার্টেন এর সকল শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকারি সকল প্রকার কার্যক্রম এর সাথে জড়িত। তাই এ দুর্দিনে সরকারের আর্থিক সহযোগিতাসহ স্কুল পরিচালনা নীতিমালা সহজীকরণের জোর দাবি জানান তিনি ।

এ প্রসঙ্গে সিংগাইর কিন্ডারগার্টেন ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও রাইজিং সান কিন্ডারগার্টেনের পরিচালক মোঃ সহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের কয়েকশ’ শিক্ষক করোনা ভাইরাসের কবলে পড়ে উপার্জনহীন হয়ে পড়েছেন। বিদ‍্যালয়গুলোতে পাঠদান বন্ধ থাকায় অভিভাবককরা বেতন পরিশোধ করাও বন্ধ করে দিয়েছেন। এ কারণে স্কুল মালিকপক্ষ শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ভাতা পরিশোধ করতে পারছেন না। যে কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। কর্মহীন হয়ে পড়া শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রণোদনা প্রদানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুলগুলোতে পাঠদান কার্যক্রম চালু করারও দাবি জানান তিনি ।

এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দা নার্গিস আক্তার বলেন, কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রণোদনার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোন নির্দেশনা পাইনি। তবে করোনাকালীন সময়ে সরকার যদি এদের কোন বিকল্প আয়ের সুযোগ করে দিতো তাহলে আর্থিক সংকট কিছুটা হলেও লাঘব হতো।

কড়চা/ এম বি

Facebook Comments Box
ভাগ