কানামাছি ভোঁ ভোঁ….

কড়চা ডেস্কঃ ‘কানামাছি ভোঁ-ভোঁ, যাকে পাবি তাকে ছোঁ’ প্রচলিত এই ছড়াটি ছোট বড় অনেককেই আওড়াতে শোনা যায়। কিন্তু বর্তমান প্রজন্মের অধিকাংশই জানে না ছড়াটির উৎপত্তি কোথা থেকে। আসলে যে খেলার সুবাদে ছড়াটি এত প্রচারিত সেই খেলাটিই আর তেমন খেলতে দেখা যায় না। তাই চর্চার অভাবে কার্যত হারিয়ে যেতে বসেছে খেলাটি। যার প্রচলিত নাম- ‘কানামাছি’।

১০-১৫ জন ছেলেমেয়ে একত্রে কিংবা আলাদা ভাবে এই খেলা খেলতে পারে। অন্যান্য খেলার মতো এই খেলাতেও প্রথমেই ‘উবু-দশ-কুড়ি’ বা অন্য কোনও গণনা-পদ্ধতির মাধ্যমে একজনের ‘মোড়’ নির্ধারণ করা হয়। নিয়ম হল, রুমাল-গামছা বা কাপড়ের কোনও টুকরো দিয়ে অন্যান্য খেলোয়াড়রা মোড়ধারীর চোখ বেঁধে দেবে। এমন ভাবে বেঁধে দিতে হবে, যাতে সে যেন কিছুই দেখতে না পায়। এরপর একজন খেলোয়াড় মোড়ধারীর হাত ধরে ‘কানা মাছি ভোঁ-ভোঁ, যাকে পাবি তাকে ছোঁ’ বলে দু’ পাক ঘুরিয়ে তাকে ছেড়ে দেবে। বাকি খেলোয়াড়রাও তখন মোড়ধারীকে ঘিরে চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ওই ছড়া আবৃত্তি করবে। আর মোড়ধারী দু’হাত ছড়িয়ে আন্দাজে অন্যদের ছোঁয়ার চেষ্টা করবে। খেলোয়াড়দের ছুঁতে গিয়ে মোড়ধারী অনেক সময়ই খানা-খন্দে পড়ে যায় কিংবা গাছ বা অন্য কোথাও ধাক্কা খায়। মোড়ধারীকে এ ভাবে বেকায়দায় পড়তে দেখে অন্যান্য খেলোয়াড়রা তখন তাকে উদ্দেশ্য করে ছড়া কেটে নানা রকম টিকা-টিপ্পনি করে। অন্যান্য খেলোয়াড়দের এই বিদ্রুপে অনেক সময় মেজাজ হারিয়ে মোড়ধারী ওই খেলোয়াড়দের ছোঁয়ার জন্য দিগবিদিক শূন্য হয়ে ছোটাছুটি শুরু করে। তখন ফের খানা-খন্দে পড়ে যাওয়া কিংবা ধাক্কা খাওয়ার ঘটনা ঘটে। এমন ঘটলেই বাকি খেলোয়াড়রা হাততালি দিয়ে মোড়ধারীকে আরও খেপিয়ে তোলার সুযোগ পেয়ে যায়। তবে সমস্ত কিছু অগ্রাহ্য করে মোড়ধারী যদি কাউকে ছুঁতে পারে,তাহলে তার মোড় ঘোঁচে। অন্য দিকে, ছোঁয়া পড়া খেলোয়াড়কে একই প্রক্রিয়ায় মোড় খাটতে হয়।

‘কানামাছি ভোঁ ভোঁ, যাকে পাবি তাকে ছোঁ’ ছড়াটি আজও আমাদের কানে বাজে। যদিও বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের ওই খেলা খেলতে তেমন একটা দেখা যায় না।”

Facebook Comments Box
ভাগ