এম.আর.লিটন : দেশের অন্যতম প্রাচীন সাংস্কৃতিক সংগঠন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর ৫২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে “দূর কর দুঃশাসন দুরাচার/জনতা জেগেছে যে দুর্বার” স্লোগান নিয়ে মানিকগঞ্জে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে । বৃহস্পতিবার (২৯অক্টোবর) বিকেল ৫ টায় উদীচী মানিকগঞ্জ জেলা সংসদের আয়োজনে শহরস্থ নিজ কার্যালয় প্রাঙ্গণে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় ।
উদীচী’র জেলা সহসভাপতি মজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি কেন্দ্রীয় সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. আজহারুল ইসলাম আরজু, উদীচী’র জেলা সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. দীপক কুমার ঘোষ, সাবেক সভাপতি লক্ষ্মী চ্যাটার্জী , খেলাঘর আসরের কেন্দ্রীয় সদস্য আরশেদ আলী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বিকাশ মন্ডল, মো. শরিফুল ইসলাম চপল ও বিমল রায় । এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সহসাধারণ সম্পাদক আরাফাত ইসলাম সুইট, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এম.আর.লিটন ও কার্যনির্বাহী সদস্য পংকজ পাল প্রমুখ ।
বক্তরা বলেন, অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠনে উদীচী’র ভূমিকা অনেক । দেশের প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী প্রথম সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে । সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সব মানুষের বাসযোগ্য করে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তোলার লড়াইয়ে উদীচী মাঠে-ময়দানে, নগরে-বন্দরে, গ্রামে-গঞ্জে নবজাগরণের গান গেয়ে চলেছে । দেশের বিভিন্ন সংকটে উদীচী গণমানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে । রাজনৈতিক শূন্যতার এ পরিবেশে সাংস্কৃতিক আন্দোলনের যে ভূমিকা, উদীচী সে সম্পর্কে সজাগ। তাই সময়ের আহ্বানে সাংস্কৃতিক বন্ধ্যাত্ব দূর করার জন্য সাংগঠনিক ও সাংস্কৃতিক কর্মসূচি গ্রহণ করে উদীচী এগিয়ে যাচ্ছে ।
শোষণহীন, মৌলবাদমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক, সাম্যবাদী সমাজ গঠনের প্রত্যয়ে সংস্কৃতিকর্মীদের এক পতাকা তলে এসে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান বক্তারা ।
উল্লেখ্য, ১৯৬৮ সালের ২৯ অক্টোবর বাংলার প্রথিতযশা কৃষক নেতা ও কথাশিল্পী কমরেড সত্যেন সেন তার তরুণ সহযোদ্ধাদের নিয়ে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী গড়ে তোলেন। পাকিস্তানের তৎকালীন সামরিক দুঃশাসনের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ সাংস্কৃতিক সংগ্রামে উদীচী মানুষকে শোষণের বিরুদ্ধে একত্রিত করে। তাই তো ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানে নব প্রতিষ্ঠিত উদীচী সংগ্রামের তল্লাটজুড়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছে। সত্তরে গণমানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সংহতি প্রকাশ করেছে। আর একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে যখন বাংলার সব মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েছেন, তখন উদীচীর শিল্পীরা হারমোনিয়াম ছেড়ে অস্ত্র ধরেছেন এবং রণাঙ্গনে সরাসরি সশস্ত্র যুদ্ধে নিঃশঙ্কচিত্তে লড়াই করেছেন।
কড়চা/ এম আর এল