কড়চা রিপোর্টঃ মানিকগঞ্জের আরিচা পয়েন্টে যমুনার পানি সামান্য কমলেও জেলার সার্বক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। জেলার শিবালয়, দৌলতপুর, হরিরামপুর, ঘিওর, সাটুরিয়া ও সদর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতির দিকে যাচ্ছে। এরই মধ্যে জেলা শহরের আশে পাশের অধিকাংশ এলাকাও প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লাখেরও বেশি মানুষ। পানিবন্দি এসব মানুষজন গবাদিপশু নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। ইতিমধ্যে বিশুদ্ধ খাবার পানি সহ খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। সরকারি ভাবে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হলেও তা যথেষ্ট নয় বলে জানান বানভাসি মানুষজন।
হরিরামপুর, শিবালয়, ঘিওর এবং দৌলতপুর উপজেলার চরাঞ্চলের পানিবন্দি মানুষ বেশি দুর্ভোগে আছে। গত দুই সপ্তাহেরও অধিক সময় ধরে পানিবন্দি থাকার পরও অধিকাংশ মানুষ এখনো কোন ত্রাণ পায়নি। জনপ্রতিনিধিরা বলছেন চাহিদার তুলনায় ত্রাণের পরিমান কম হওয়ায় সকলকে ত্রাণ দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে প্রশাসন থেকে বলা হচ্ছে, পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা আছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আমির হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে জেলার বিভিন্ন উপজেলার বন্যাদুর্গত এলাকায় ১০ হাজার পরিবারকে চাল, শুকনো খাবার, শিশু খাদ্য ও গোখাদ্যের জন্য নগদ টাকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, ঈদ সামনে রেখে ভিজিএফ কার্ডধারী ১ লাখ ৭ হাজার ৮৫৩ দুস্থ ব্যক্তিকে ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌসসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে এসব ত্রাণ বিতরণ করছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত থাকবে।
মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় যমুনার পানি আরিচা পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার কমে এখন বিপদসীমার ৭৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া অভ্যন্তরীণ নদী কালিগঙ্গার পানি তরা পয়েন্টে স্থিতিশীল থেকে বিপদসীমার ১১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত অপর নদী ধলেশ্বরীর পানি জাগীর পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ১০৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসাণ অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, বন্যার পানিতে ইতিমধ্যে ২৪ হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে।
এদিকে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি দিন দিন অবনতি হচ্ছে। এর মধ্যে পৌর এলাকায় অধিকাংশ এলাকায় পানি উঠে গেছে। পৌর সভার হিসাব অনুযায়ী পানির নীচে তলিয়ে গেছে ১২ কিলোমিটার পাকা সড়ক।