মানিকগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধাদের মিলনমেলা

কড়চা রিপোর্ট : ঢাকার পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মানিকগঞ্জে অনুষ্ঠিত হয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মিলনমেলা। গতকাল শনিবার (৫ মার্চ) সকাল থেকে শহীদ মিরাজ-তপন স্টেডিয়ামে ২নং সেক্টরের অধীন ঢাকা মহানগর, ঢাকা জেলা, মুন্সীগঞ্জ ও মানিকগঞ্জের ২১টি উপজেলার সাড়ে তিন হাজার মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এই মিলনমেলার আয়োজন করা হয়।

বেলা ১১টায় শহীদ মিরাজ তপন স্টেডিয়ামে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে উত্তোলন করা হয় জাতীয় পতাকা ও মুক্তিযুদ্ধের পতাকা। এরপর অতিথিদের বরণ করে নেয়া হয় গান আর নৃত্যের তালে তালে।

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মিলনমেলার আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা বেনজীর আহমেদ এমপির সভাপতিত্বে দিনব্যাপী মুক্তিযোদ্ধাদের মিলনমেলা উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধাবিষয়কমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম মোজাম্মেল হক। এছাড়া অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরবিক্রম), স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সাবেক মন্ত্রী আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান এমপি, ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজুল ইসলাম খান কামাল, মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয়, মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম, সাবেক এমপি সুবেদ আলী টিপু, বিশিষ্ট শিল্পপতি ইউনিক গ্রুপের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর আলী, মোস্তফা জালাল মহীউদ্দিন, মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মহীউদ্দীন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান ও মুন্সীগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমান।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল দাবি করেছেন খালেদা জিয়া দেশের প্রথম মহিলা মুক্তিযোদ্ধা ও তারেক জিয়া শিশু মুক্তিযোদ্ধা। যুদ্ধের সময় বেগম খালেদা জিয়া ৯ মাস ক্যান্টনমেন্টে ছিলেন এ কথা সবাই জানেন। দুই ধরনের নারী ক্যান্টনমেন্টে ছিলেন। এক ধরনের নারী স্বেচ্ছায় আর এক ধরনের নারীকে জোর করে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাহলে খালেদা জিয়া কীভাবে মুক্তিযোদ্ধা হন তা মির্জা ফখরুলকে প্রমাণ করতে হবে।

জিয়াউর রহমানকে খুনি জিয়া উল্লেখ করে মুক্তিযোদ্ধামন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় জিয়া বলেছিলেন রাজনৈতিক সরকারের (মুজিব সরকার) অধীনে তিনি যুদ্ধ করবেন না। তাকে ওই সময় বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরে ক্ষমা চেয়ে তিনি যুদ্ধে অংশ নেন। ’৭৫-এর পরবর্তী সময়ে জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছিলেন। মুক্তিযোদ্ধার অনেক পরিবার লাশ পর্যন্ত পায়নি। তিনি আরো বলেন, আগামী ২৬ মার্চ থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরিচয়পত্র দেয়া হবে। এছাড়া সারাদেশে সব মুক্তিযোদ্ধার কবরের ডিজাইন একই রকম হবে। শতবছর পরও যাতে কবর দেখে মানুষ জানতে পারেন এটা মুক্তিযোদ্ধার কবর।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, দেশকে অকার্যকর করতে দেশে ও বিদেশে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্র রুখতে মুক্তিযোদ্ধাসহ দেশবাসীকে সজাগ থাকতে হবে। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাওয়ার কারণে একটি মহল ঈর্ষান্বিত হয়ে তাকে ১৯ বার হত্যার চেষ্টা করে।

সভাপতির বক্তব্যে সংসদ সদস্য বেনজীর আহমেদ বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এ মিলনমেলার আয়োজন করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। এ কারণে মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মিলনমেলার আয়োজন করা হয়েছে।

বিকালে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ও সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমসহ দেশের জনপ্রিয় শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন। এছাড়া লাঠি খেলা, সাপ খেলা, বিভিন্ন শিল্প গোষ্ঠীর নৃত্য পরিবেশন করা হয়।

কড়চা/ বি সি

Facebook Comments Box
ভাগ