সিংগাইরের নয়নজলি খাল, প্রশাসনের নজরদারি সত্বেও দখলমুক্ত হয়নি

মাসুম বাদশাহ: প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ থাকা সত্ত্বেও মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার বায়রা ইউনিয়নের গাড়াদিয়া বাসস্ট্যান্ডের পূর্ব পাশে অবৈধভাবে দখলকৃত নয়নজলি খালের জায়গা ছেড়ে দিতে তালবাহানা করছে দখলদার। চলমান করোনা পরিস্থিতিতে স্থানীয় দালাল চক্রের সহায়তায় প্রবাহমান খালের সরকারি জায়গা দখল করে মাটি ভরাট ও বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণ করে জনৈক নুরুল ইসলাম খান বাবুলের মালিকানাধীন ঢাকা প্যাকেজিং অ্যান্ড প্রিন্টিং ইন্ডাষ্ট্রি। পাশাপাশি হেমায়েতপুর-সিংগাইর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি কালভার্ট অকেজো করে ফেলার পায়তারা করে ওই প্রতিষ্ঠানটি।

এ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে একাধিকবার স্বচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদের সূত্র ধরে বিষয়টি আমলে নেন উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মেহের নিগার সুলতানা। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা মোঃ ঝিলন খানকে সার্ভেয়ার নিয়ে পরিমাপ করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির লোকজনের উপস্থিতিতে ওই জায়গা পরিমাপ করা হয়। এতে দখলের সত্যতা মিলে।

সূত্রমতে, প্রতিষ্ঠানটি নয়নজলি খালের শতাধিক ফুট দৈর্ঘর দক্ষিণ পাশে ১৪ ফুট ও উত্তর পাশে ৫ ফুট জায়গা মাটি ভরাট করে দখলে নেয়। প্রশাসন অবৈধভাবে দখলকৃত ওই জায়গার মাটি ও বাউন্ডারি দেয়াল ১০ জুলাইয়ের মধ্যে অপসারণের নোটিশ দেন।

সরেজমিনে বুধবার (১৫ জুলাই) দেখা যায়, প্রশাসনের দেয়া রেড মার্ক করা জায়গা থেকে অপসারণের কাজ বন্ধ রয়েছে। দখলদার প্রতিষ্ঠানটি তাদের শ্রমিক দিয়ে ইতিমধ্যে দক্ষিণ পাশের দেয়ালের কিছু অংশ ভাঙ্গলেও বাকি কাজ বন্ধ রয়েছে। এর আগে গত ১২ জুলাই ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা প্রতিষ্ঠানটির পার্টনার এম শহিদুর রহমানের কাছে খালটি পূর্বাস্থায় ফিরিয়ে দেয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরিমাপ অনুযায়ী আমরা সরকারি জায়গা ছেড়ে দিচ্ছি। খালটি সচল না অচল থাকবে সেটা আমাদের বিষয় না। এ সময় ঢাকা প্যাকেজিং অ‍্যান্ড প্রিন্টিং ইন্ডাস্ট্রির মালিক নুরুল ইসলাম খান বাবুল বিরূপ মন্তব্য করে বলেন, কি করব না করব সেটা আমাদের বিষয়।

এদিকে, প্রশাসনের সময়োপযোগী হস্তক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বায়রা এলাকার চালিতাতলা চকের (পানু বাবুর বন্দ) সংশ্লিষ্ট কৃষকেরা। তারা দ্রুত নয়নজলিকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনার জোর দাবি জানান।

বায়রা ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা মোঃ ঝিলন খান বলেন, সরকারি জায়গা হতে ভরাটকৃত মাটি ও দেয়াল অপসারণ না করলে আইনী প্রক্রিয়ায় দ্রুত উচ্ছেদ কার্যক্রম চালানো হবে।

এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মেহের নিগার সুলতানা বলেন, উচ্ছেদ কার্যক্রমের কপি সৃজন করে ডিসি স্যারের কাছে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করে আইনগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উচ্ছেদ করা হবে।

কড়চা/ এম বি

Facebook Comments Box
ভাগ