সিংগাইর সিরাজপুর হাটে তিনগুণ খাজনা আদায়, ক্রেতা-বিক্রেতা বিপাকে

মাসুম বাদশাহঃ মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার সর্ববৃহৎ চান্দহর ইউনিয়নের সিরাজপুর পশুর হাটের ইজারাদার সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে তিনগুণ হারে বেশি খাজনা আদায় করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে ক্রেতা-বিক্রেতা পড়েছেন বিপাকে।

জানা গেছে, উপজেলায় ৪ টি পশু হাটের মধ্যে এটি সর্ববৃহৎ। ১ কোটি ৪ লাখ টাকায় ইজারাদার (বাংলা ১৪২৭ সন) এক বছরের জন্য হাটটি ইজারা নেন। সপ্তাহে প্রতি বুধবার বসে এ গরুর হাট। উপজেলা হাট-বাজার বাস্তবায়ন কমিটি সূত্রে জানা যায়, সরকার নির্ধারিত খাজনা গরু বা মহিষের ক্ষেত্রে শতকরা ৩ টাকা। কিন্তু ইজারাদার নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ইচ্ছেমতো ১০ টাকা হারে খাজনা আদায় করছেন। ছাগল বা ভেড়ার ক্ষেত্রে নেয়া হচ্ছে এর চেয়েও বেশি। সরকার নিধার্রিত খাজনা আদায়ের তালিকা হাটের জনসম্মুখে লাগানোর নিয়ম থাকলেও এখানে তা মানা হয়নি।

সরেজমিন গত বুধবার (২২ জুলাই) ওই হাটে গিয়ে দেখা গেছে, ইজারাদারের লোকজন তাদের নির্দিষ্ট হাসিল ঘরে বসে খাজনা আদায়ের বিপরীতে রশিদ দিচ্ছেন। রশিদে উল্লেখিত পরিমান টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছেন ক্রেতা সাধারণ। এ সময় কথা হয় পার্শ্ববর্তী নবাবগঞ্জ উপজেলার রায়পুর গ্রামের ছাগল ক্রেতা বাচ্চু ব্যাপারীর সঙ্গেঁ। ১০ হাজার টাকায় একটি ছাগল ক্রয় করে তাকে দিতে হয়েছে ১ হাজার টাকা খাজনা। ওই ক্রেতা অভিযোগ করে বলেন, আমি হাসিল ঘরে গিয়ে ১০০ টাকা কম নিতে অনুরোধ করলে তারা আমার কথার কোনো গুরুত্বই দেয়নি। এটা এক প্রকার জুলুম বলেও তিনি জানান।

একাধিক গরু ব্যাপারীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, ইজারাদার সরকারি নিয়মের বাইরে খাজনার অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে। তবে ইজারাদারের দেয়া ৩ হাজার টাকার বিনিময়ে বাৎসরিক কার্ডধারী ব্যাপারিরা গরু প্রতি ৫’শ টাকা দিয়েই পার পাচ্ছেন। কার্ড ছাড়া ব্যাপারি ও ক্রেতাদের গুণতে হচ্ছে দ্বিগুণ-তিনগুণ অর্থ। সেই সঙ্গে হাটটিতে মানা হচ্ছে না কোনো সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি। ফলে, করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে হাটে আগত ক্রেতা-বিক্রেতারা।

সিরাজপুর গবাদি পশুর হাট ইজারাদার আজিজুর রহমান ১০ টাকা হারে খাজনা আদায়ের কথা স্বীকার করে বলেন, হাটটি টিকিয়ে রাখতে অন্যান্য হাটের চেয়ে কম হারে খাজনা নেয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা নিবার্হী অফিসার ও হাট-বাজার ইজারা বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি রুনা লায়লা বলেন, সরকারি খাজনা আদায়ের নির্ধারিত হার আমার জানা নেই। খাজনা আদায়ের চার্ট না টানানো ও স্বাস্থ্যবিধি না মানার বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কড়চা/ এমবি

Facebook Comments Box
ভাগ