সাংবাদিক মোস্তাক আহম্মেদ স্মরণে এলোমেলো ভাবনা/ রুহুল ইসলাম টিপু

সাংবাদিক মোস্তাক আহম্মেদ

জ্যৈষ্ঠ সাংবাদিক মোস্তাক আহম্মেদ প্রয়াত হয়েছেন ২৮ জুলাই ২০১৯। ২০২০ সালের একই তারিখে কড়চা অন লাইন নিউজ পোর্টাল এ সাব্বিরুল ইসলাম সাবু ভাইয়ের লেখা পড়ে আমি বেশ আবেগ তাড়িত হয়ে পড়ি। চলে যাই আশির দশকে। কলেজে পড়ি। বাসায় খবরের কাগজ পড়া হতো। খুব ছোট বেলায় দেখেছি মা’কে সাপ্তাহিক বেগম পড়তে। বেগম এর অনেক সংখ্যা আমার সংরক্ষণে ছিল। যত্নের অভাবে হারিয়ে ফেলি। তবে বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ এর কাউন্সিলর হিসেবে বেগম সম্পাদক নুরজাহান বেগম এর কাছাকাছি কিছু সময় কাটাবার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল।

আজ আমার নিবেদন মোস্তাক ভাইকে নিয়ে; তাকে পেলাম যেভাবে। মোস্তাক ভাই সম্পর্কে লিখতে হলে বলতে হবে পতাকা’র কথা। সাপ্তাহিক পতাকা। মানিকগঞ্জ থেকে নিয়মিত প্রকাশিত হয় পতাকা, আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে নব্বই দশকের বেশ কয়েকটি বছর পর্যন্ত। এখন প্রকাশিত হচ্ছে অন লাইন পোর্টালে। সম্পাদক ও প্রকাশক মির্জা আমিন আহমেদ ইয়ান। আমাদের ইয়ান ভাই। আমি বাবা মা’য়ের সাথে গ্রামের বাড়ি মান্তা গিয়েছি। মান্তার মাঠে বসেছে বাৎসরিক পৌষ সংক্রান্তি মেলা। মেলায় কোন একটি দোকান থেকে সম্ভবত: খাবারের কিছু একটি কিনেছি। সেই খাবারের সাথের মুড়ানো কাগজটি ছিল সাপ্তাহিক পতাকার কিছু অংশ। শুরু হলো আমার সাথে পতাকার সম্পর্ক। কিশোর বয়সে আমার কৌতুহলের মাত্রা বাড়ে। সন্ধান করি পতাকা কোথা থেকে বের হয়? কারা বের করেন? কলেজে দ্বিতীয় বা তৃতীয় বর্ষে পড়াশুনার কারণে খুব যে বেশি সাহসী ছিলাম তাও নয়। সংবাদপত্রের প্রতি প্রচন্ড টান অনুভব করতাম। কিছু লেখার খুব ইচ্ছে ছিল। ছাপার অক্ষরে নিজের লেখা দেখার আনন্দ অন্য কিছুতে পাই না। এখনও না। সেই নেশায় আবার লিখছি কড়চায় নিয়মিতভাবে। মানুষকে দেওয়ার এবং গ্রহণের এই মাধ্যম অনন্য। তাই প্রথমেই পতাকার ঠিকানা খুঁজে বের করি।

আমাদের সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের উত্তর দিকে মোনা এজেন্সীর অফিসেই পতাকার অস্থায়ী অফিস। মানিকগঞ্জ শহরে ঔষধের এজেন্সি তখন সুবর্ণ এজেন্সী ইকবাল হোসেন কচি ভাইয়ের দোকান ও মোনা এজেন্সী। মোনা এজেন্সীতে কাজ করতেন টগর দার কথা এখনও মনে আছে। ইয়ান ভাইয়ের নানাও এখানে বসতেন। তিনি সম্ভবত: একটি ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান। বিচারপতি এ.কে.এম. নুরুল ইসলাম বাংলাদেশের উপ রাষ্ট্রপতি হলে একই আসন থেকে ডাঃ লুৎফর রহমান বিশ^াস সংসদ সদস্য হলেন। তিনিও মোনা এজেন্সীতে বসতেন এবং রাজনৈতিক কর্ম পরিচালনা করতেন। আমার মতো একজন কলেজ ছাত্রের পক্ষে চট করে মোনা এজেন্সী এবং পতাকার সাথে যোগাযোগ খুব সহজ হয়ে উঠেছিল এমন নয়।

তবে সহজ করে দিলেন মোস্তাক আহম্মেদ। পরিচয়ের শুরুতেই আপন করে নিয়েছিলেন আমাকে। মোস্তাক ভাইয়ের বাড়ি বান্দুটিয়া। আমি বেউথার। শুরু হলো একসাথে চলা এবং কাজ করা। আমাদের সঙ্গী মানিকগঞ্জের সাপ্তাহিক পতাকা। যুক্ত ছিলেন সেলিম খান। ইয়ান ভাই, সেলিম ভাই, মোস্তাক ভাই আর ছোট্ট আমি মিলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা দিয়ে প্রিয় পতাকাকে প্রতি সপ্তাহে সাজাতাম নতুন আঙ্গিকে। তুলে ধরতাম মানিকগঞ্জকে। সংবাদের সাথে থাকত ভিন্ন আমেজের অনেক কিছু। যেমন পাঠক লিখতে পারতেন কবিতা, সাহিত্য থেকে শুরু করে সব ধরনের যোগ সূত্রই পতাকাকে জনপ্রিয় করেছিল।

পতাকা প্রকাশনার সময়কালে অর্থ্যাৎ আশির দশকে বাংলাদেশ ৯ টি বছর সংগ্রাম করেছে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন করে। আমরা সকলেই জানি জাতীয় রাজনীতিতে সব সময় মানিকগঞ্জের উল্লেখযোগ্য অবদান থাকে। ’৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ এবং ’৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে বাংলাদেশে মানিকগঞ্জের অবদান দেশবাসি ওয়াকেবহাল। যার সফলতা আসে ০৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার সরকার পতনের মধ্য দিয়ে। সে সময়কার সাপ্তাহিক কাগজকে অনেক ধরণের বাধা অতিক্রম করে কাজ করতে হতো। বিশেষ করে শাসক সরকারের বিরুদ্ধচারণ কোন সংবাদ প্রকাশিত হলেই ঘটতো বিপত্তি। মোস্তাক ভাই এ ধরণের ঘটনাকে মাথা পেতে নিজের উপর দিয়ে সামাল দিয়েছেন। আমাদের বুঝতেও দেন নি। সেসব ঘটনা আর এক লেখায় তুলে ধরব।

আমাদের পতাকা অফিস শহরের জামে মসজিদ সংলগ্ন। ইয়ান ভাইয়ের নিজস্ব পৈত্রিক জায়গা। মসজিদ ইয়ান ভাইয়ের পূর্ব পুরুষ ওয়াক্ফ করে দিয়েছেন। দুই চালা বেড়ার ঘরে বসে আমার সাংবাদিকতার হাতে ঘড়ি। শিক্ষক মোস্তাক ভাই। লিখি এবং কাটি। তৈরী হয় সংবাদ, প্রতিবেদন। ঘরে একটি ফ্যানও ছিল না। আমরা ঘামছি আর কাজ করছি পতাকার জন্য। সাপ্তাহিক কাগজ। ছাপার কাজ করতে হবে ঢাকায়। সংবাদ সংগ্রহ, লেখা, সম্পাদনা এসব মানিকগঞ্জে। বের হবে শুক্রবার। বুধবারের মধ্যে ঢাকায় ম্যাটার নিয়ে যেতে হবে। ঢাকার কাজ করেন ইয়ান ভাই এবং সেলিম ভাই। কম্পিউটার আসার পূর্বে ব্লক তৈরী, ছোট বড় অক্ষরে দুই-তিন কলাম শিরোনাম তৈরীসহ নানাবিধ কাজ। কখনও নয়াবাজার, পল্টন হয়ে প্রেস। এরপর ছাপানো পতাকা যাবে মানিকগঞ্জ। জেলা শহর থেকে ডাকঘর বা হাতে হাতে মানিকগঞ্জের সকল উপজেলা এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে। শুরুতে সার্বিক সমন্বয়ের কাজটি করতেন মোস্তাক ভাই। সংবাদ সংগ্রহের বড় অংশ দেখভাল ছিল মোস্তাক ভাইয়ের উপর। সবচেয়ে কঠিন কাজ পত্রিকার অর্থ। খরচ যুগিয়েছিলেন ইয়ান ভাই। বিজ্ঞাপন সংগ্রহ সেটি সরকারি বা বেসরকারি সব ক্ষেত্রে দায়িত্ব কাধে নিয়ে ছিলেন মোস্তাক ভাই। মোস্তাক ভাই নিয়ে কথা বলবো, সেখানে পতাকা থাকবে না। সেটি হবার নয়। পতাকার কথা বলে কাউকে ছোট বা বড় করা আমার কাজ নয়। আমি সকলের কাছেই ঋণী, এটিই চরম সত্য। আজ মোস্তাক ভাই নেই। এ বেদনা আমার নিকট বড় কষ্টের। আমরা ছিলাম সুখ দুঃখের সাথী। মোস্তাক ভাই যা আমাদের দিয়েছেন; তার চর্চা করবো না। এটি হলে, আমার সমস্ত শিক্ষাই বৃথা। মোস্তাক ভাই, সেলিম ভাই, ইয়ান ভাই সকলে আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। পতাকায় একটি সমন্বিত সাংবাদিকতার পদ্ধতি চালু হয়েছিল। প্রতিটি উপজেলা এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আমাদের দায়িত্বপূর্ণ প্রতিনিধি ছিলেন। তাদের কেউ কেউ পরবর্তী সময়ে জাতীয় এবং আরও বড় মাপের সাংবাদিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। আজ ভাবতে অবাক লাগে পতাকা ফ্যান ছাড়া চালা ঘরে মানিকগঞ্জের বরেণ্য ব্যক্তিদের উপস্থিতি। তাদের সাথে নিয়ে সাহিত্য আসর এবং সমসাময়িক আলোচনা পতাকাকে করেছিল সমৃদ্ধ। মোস্তাক ভাইকে সকাল দুপুর সন্ধ্যা এমন কোন সময় ছিল না যে তাকে পাওয়া যেত না। তখন মোবাইল ছিল না। ফোন, মোনা এজেন্সী এবং পাবলিক কল অফিস (পিসিও); আমার সাথে যোগাযোগ বেউথা ফায়ার সার্ভিসের ফোন। পতাকার উন্নয়নে তার কর্মীদলকে সহযোগিতা, এটি ছিল মোস্তাক ভাই এর ব্রত। কর্মীদল তৈরী এবং তাদের এসাইনমেন্ট প্রদান করে যথাসময়ে কাজ উদ্ধারে তার মুন্সীয়ানা ছিল দেখার মতো।

পতাকাতে কাজ করার জন্য আমি আশা কেন্দ্রীয় কার্যালয়, ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাংবাদিকতা প্রশিক্ষণের সুযোগ পেয়েছিলাম। এটিই ছিল আমার জীবনের সাংবাদিকতা শিক্ষার ভিত্তি। আশা জার্নালিজম ইন্সটিটিউট পরিচালনা করতেন কামরুল হাসান মঞ্জু। মঞ্জু ভাই আমাদের দেশের আবৃত্তি শিল্পীর পথিকৃতদের একজন। তিনিও পৃথিবী ছেড়েছেন। মঞ্জু ভাইয়ের পরিচালনায় সাংবাদিকতা প্রশিক্ষণে আমি বেশ অগ্রগামীই ছিলাম। সারা দেশের শতাধিক মফস্বল সাংবাদিকদের নিয়ে আশা জার্নালিজম ইন্সটিটিউট একটি সম্মেলনের আয়োজন করে। সম্মেলনের প্রধান অতিথি বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমেদ। যেটি বাংলাদেশ ইন্সটিউিট অব ম্যানেজমেন্ট (বিআইএম), ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়।

আজকের লেখায় মোস্তাক ভাইকে বেশি করে আনতে না পারার ব্যর্থতা আমার। কারণ পতাকার পরে আমি আর কাগজে কাজ করিনি। আমার কর্ম ক্ষেত্র ভিন্ন হওয়ার কারণে দূরত্ব বেড়ে যায়। এর মাঝে মোস্তাক ভাইকে যে হারিয়ে ফেলবো; সেটি আমি এবং আমরা বুঝি নি। আমার জন্মস্থান প্রিয় মানিকগঞ্জ শহরও আজ আমার নিকট বেশ দূরে; কারণ আমার বড় মেয়ে অটিস্টিক। তাকে আমার এতো সময় দিতে হয়; রুটি রোজগারের বাইরে কিছুই ভাবতে পারি না। মেয়ের কারণে আমি উন্নয়ন কর্মী থেকে ডেস্কের কাজে আমাকে নিয়োজিত করেছি। আজ আবারও সাবু ভাইকে ধন্যবাদ। তার লেখার মধ্য দিয়ে মোস্তাক ভাইকে পুনরায় খুঁজে পেলাম।

মোস্তাক ভাইয়ের হাত ধরে আসা পতাকা আমাকে দিয়েছে অগণিত সম্মান। সম্ভবতঃ ২০১২ বা ২০১৩ সালে আবাবিল সম্পাদক অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম আকবর জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজন করেছিলেন তার পত্রিকার একটি প্রোগ্রাম। সেখানে আমিনুল আমাকে সালাম করে যে সম্মান দেখিয়েছিলেন; এ রকম সম্মান আমি জীবনে কোথাও পাইনি। আমিনুল শুধু বলেছিলেন, আমি আপনার নিকট হতে লিখতে শিখেছিলাম। সভায় উপস্থিত ছিলেন সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, মানিকগঞ্জের সংসদ সদস্য এস এম আব্দুল মান্নান, পতাকা সম্পাদক মির্জা আমিন আহমেদ ইয়ান সহ অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ। একই সাথে আমার আরেক সাংবাদিক ভাই এবং বন্ধু আবুল কালাম বিশ্বাস যিনি অ্যাডভোকেট আমিনুল এর সাথে এ প্রোগ্রাম সফলভাবে সম্পন্ন করেছিলেন। কালাম আজ প্রয়াত। তাকে স্মরণ করি, জানাই শ্রদ্ধা।

আজ পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়সে এসে এটি উপলব্ধি করছি, সাংবাদিকতা একটি মহান এবং সম্মানের পেশা। সাংবাদিক সাধারণ ব্যক্তি নয়। তারা সমাজের অনেক উর্ধের মানুষ। দেশ এবং জাতিকে তারা দূর হতে দেখতে পান। এ সম্পর্কে মনে পড়ছে উপজেলা সহকারি শিক্ষা অফিসার জনাব আবু হানিফের সহযোগিতায় শিক্ষা ক্ষেত্রে ঝরে পড়ার উপর ধারাবাহিক প্রতিবেদন পতাকায় আমি প্রকাশ করেছিলাম। এখন শতভাগ ছাত্র-ছাত্রী স্কুেল গমণ করছে। এখনও শিক্ষা ক্ষেত্রে বড় বাধা ঝরে পড়া। আশির দশকে ৫০ ভাগেরও কম শিশু স্কুলে ঢুকছে, তখন এ সমস্যা ছিল আরও ভয়াবহ। এ মুহূর্তে কল্পনা করতে পারছি না। অথচ ঝরে পড়ার প্রতিবেদন প্রকাশ পতাকার দূরদর্শী অনেক কাজের একটি নমুনা মাত্র। আমরা সেসব বাধা অতিক্রম করেছি। এ পেশার একজন সাবেক কর্মী হিসেবে এখন বুঝতে পারি, সাংবাদিকের দূরদর্শীতা, দেশকে নিয়ে তারা ভাবেন এবং দেশের জন্য অবদান রাখেন। কয়েকদিন পূর্বে আমাদের এক বন্ধু লুৎফুন নেসা লাইলী ফোনে জিজ্ঞেস করেন আমি লিখি কি না। উত্তর নেতিবাচক হওয়ায় তিনি বলেন তার অনেক কবিতা পতাকায় প্রকাশিত হয়। আমি এসব ভুলেও গিয়েছিলাম। এতে কলেজ পড়ুয়া বন্ধুরা তার প্রতি বেশ ঈর্ষান্বিত ছিলেন। মোস্তাক ভাই স্মরণে পতাকা এবং সংশ্লিষ্ট অনেক বিষয় আসা অস্বাভাবিক নয়। পতাকাকে অনুরোধ মোস্তাক ভাইকে স্থায়ীভাবে ধরে রাখার একটি উদ্যোগ গ্রহণ করতে, সেটির মাঝে মোস্তাক ভাইকে খুঁজে পাবো আমরা।

আমাকে পতাকা চিনিয়েছেন মোস্তাক ভাই। পেশা হিসেবে সাংবাদিকতা একটি ঝুঁকিপূর্ণ দায়িত্ব। মোস্তাক ভাই দীর্ঘ কর্ম জীবনে কখনও পেশাগত ঝুঁকির মধ্যে আমাকে এবং আমাদের ফেলেননি। মোস্তাক ভাইকে স্মরণ করতে গিয়ে হয়ত এলোমেলো অনেক কথাই বলে ফেললাম। ভুল হলে আমাকে মার্জনা করবেন।

মোস্তাক ভাই, আমার বিশ্বাস আপনি ওপারে ভালো আছেন। আপনার শিখানো আলো নিয়েই পথ চলছি। আমি ধন্য এবং আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ।

কড়চা/ আর আই টি

Facebook Comments Box
ভাগ