সিংগাইরে জনচলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিলেন নায়ক অনন্ত জলিল, মানুষের ভোগান্তি

মাসুম বাদশাহঃ মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার ধল্লা গ্রামে সরকারি অর্থায়নে নির্মিত জনচলাচলের রাস্তার ইট উপড়ে ফেলে বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণ করায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক অনন্ত জলিল। দীর্ঘদিনের পুরনো এ রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়ায় বিপাকে পড়েছেন ওই এলাকার হাজারো মানুষ।

বুধবার (২৪ জুন) সকালে সরেজমিনে জানা গেছে, ধল্লা মধ্যপাড়া ক্বারী আব্দুল আলী পীর সাহেবের বাড়ি থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ হয়ে ধল্লা উচ্চ বিদ্যালয়, মাদরাসা, কবরস্থান ও বাজারে যাতায়াতের রাস্তটি ভেঙ্গেঁ দেয়াল নির্মাণ করায় চরম বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে তাদের মধ্যে ।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, এর আগে গত ২৯ জানুয়ারি অনন্ত জলিলের সশস্ত্র আনসার বাহিনী ওই রাস্তার কিছু অংশের ইট উপড়ে ফেললে জনগণের বাঁধার মুখে পিছু হটে তারা। পরবর্তীতে নায়ক অনন্ত জলিল ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও থানা পুলিশের উপস্থিতিতে জনচলাচলের এ রাস্তাটির ওই অংশে ফুট ওভার ব্রীজ করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

নায়ক অনন্ত জলিল

এদিকে, ৬ মাস না যেতেই চলমান করোনা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে গত ১৮ জুন অনন্ত জলিলের লোকজন দু’পাশে দেয়াল নির্মাণ করে রাস্তাটি একেবারে বন্ধ করে দেন। ওই এলাকার বাসিন্দা সাবেক উপজেলা কৃষকলীগ সভাপতি মোঃ আমজাদ হোসেন খান, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা ইসহাক খান, রহুল আমীন মাস্টার,আব্দুর রহমান মাস্টার, আব্দুল ওয়াহেদ মিয়া ও হাজী নাঈমুর রহমান তকছের ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, যুগ যুগ ধরে আমরা এ রাস্তাটি ব্যবহার করে আসছি। দেড় বছর আগে গুরত্বপূর্ণ এ রাস্তাটি সরকারি বরাদ্দে ইটের সলিং করা হয়। রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়ায় আমরা পড়েছি চরম বিপাকে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৭ সালে এমএ জলিল অনন্ত ধল্লা মৌজায় বৃদ্ধাশ্রম করার জন্য ২০ বিঘা জমি ক্রয় করেন। বন্ধ করা রাস্তাটি তার ক্রয়কৃত জমির ওপর ছিল। রাস্তাটিতে ২০১৭ সালে টিআর প্রকল্পের আওতায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা ব্যয় করে মাটি ভরাট করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এলজিএসপি প্রকল্পের অধীনে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে ইটের সলিং করা হয়। এতে রাস্তার গুরুত্ব আরো বেড়ে যায়।

স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ আনিছ মিয়া বলেন, পুরনো এ রাস্তাটি সরকারি বরাদ্দে কাজ হলেও বন্ধের ব্যাপারে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিষেধ থাকায় আমরা প্রতিবাদ করিনি।

অনন্ত জলিলের মালিকানাধীন এজেআই গ্রুপের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা আবু তাহের রাস্তা বন্ধ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন।

সিংগাইর উপজেলা নিবার্হী অফিসার রুনা লায়লা বলেন, বিকল্প রাস্তার প্রতিশ্রুতিতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মোতাবেক জমির মালিক রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে।

এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক এসএম ফেরদৌস বলেন, সরকারি বরাদ্দে নির্মিত রাস্তা বন্ধের বিষয়টি আমার জানা নেই। স্থানীয় লোকজনের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Facebook Comments Box
ভাগ