কড়চা রিপোর্ট : রাজনীতির মাঠে নতুন খেলোয়াড় হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে এনসিপি (ন্যাশনাল কনসেনসাস পার্টি)। সংগঠনটি সম্প্রতি দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করায় স্থানীয় রাজনীতিতে নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এরই মধ্যে মানিকগঞ্জে দলটির নেতৃত্ব ঘিরে একপক্ষের বিরুদ্ধে অন্যপক্ষের অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি।
অপপ্রচারের অভিযোগ এনসিপি নেতার
শনিবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে মানিকগঞ্জ শহরের এনসিপি’র অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রধান সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট জাহিদুর রহমান তালুকদার অভিযোগ করেন, এনসিপি’র দ্রুত জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক বিস্তার অনেকের চোখে ঈর্ষার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই ঈর্ষা থেকেই একটি মহল আমাদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের কিছু নেতা দেশের বাইরে থাকলেও বাকিরা দেশে থেকেই রাজনীতি করছেন। ষড়যন্ত্র করতে মাঠে নামতে হয় না—একবার মনেরে ভেতর ঢুকিয়ে দিলেই দিলেই তা কাজ করে।
‘মামলা বাণিজ্যে’ জড়িত রাব্বি — দাবি জাহিদুরের
সংবাদ সম্মেলনে জাহিদুর রহমান আরও অভিযোগ করেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা রাব্বি নিজেই মামলার বাদী হয়ে জড়িয়েছেন ‘মামলা বাণিজ্যে’।
তার দাবি, মামলা করার পর রাব্বি আদালতে এফিডেভিটের মাধ্যমে বিভিন্ন আসামির পক্ষে সাফাই গেয়ে তাদের নাম বাদ দিচ্ছেন। বিনিময়ে আর্থিক সুবিধাও নিচ্ছেন।
এমন কর্মকাণ্ডে আদালতও রাব্বির আচরণে অসন্তুষ্ট হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি আরও জানান, রাব্বি তার মামলায় মানিকগঞ্জ পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র তসলিম হৃদয়, লাভলু, রেজাউল করিম চঞ্চল, মাসুদ, দ্বীন ইসলাম ও কামরুলসহ আরও অনেকের নাম “ভুলবশত” অন্তর্ভুক্ত করেছেন বলে আদালতে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু বাস্তবে এসব নাম বাদ দেওয়া হয়েছে টাকার বিনিময়ে—এমন অভিযোগও করেন এনসিপি নেতা।
রাব্বির পাল্টা অভিযোগ
অন্যদিকে, জুলাই যোদ্ধা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলার বাদী সাদিকুল ইসলাম রাব্বি গত বুধবার (৮ অক্টোবর) এনসিপি’র কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল্লাহ হায়দারের কাছে এক লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
অভিযোগে তিনি বলেন, মামলার ৫৯ নম্বর আসামি ও মানিকগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট দেওয়ান মতিনের নাম বাদ না দেওয়ায় এনসিপি জেলা প্রধান সমন্বয়কারী জাহিদ তালুকদার ও যুগ্ম সমন্বয়কারী মাহফুজ তাকে হুমকি দিচ্ছেন।
রাব্বির অভিযোগ, চিকিৎসার জন্য সংগৃহীত অর্থও তার কাছে পৌঁছায়নি। মামলার কারণে তিনি ভয়ভীতিতে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন।
রাজনীতির মাঠে নতুন সমীকরণ
মানিকগঞ্জে এনসিপি’র ক্রমবর্ধমান কার্যক্রম নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলে ইতিমধ্যে কৌতূহল দেখা দিয়েছে। কেউ দেখছেন নতুন রাজনৈতিক বিকল্প হিসেবে, আবার কেউ সন্দেহ করছেন গোপন কোনো এজেন্ডা।
তবে স্থানীয় পর্যায়ে এমন দ্বন্দ্ব-অভিযোগ এনসিপি’র সংগঠনগত স্থিতি ও গ্রহণযোগ্যতার ওপর কতটা প্রভাব ফেলবে—তা এখনই বলা কঠিন।
কড়চা/এস এস
















