নানা সংকটে মানিকগঞ্জের পানিবন্দি মানুষেরা

বিশেষ প্রতিনিধিঃ মানিকগঞ্জে পদ্মা ও যমুনায় পানি না বাড়লেও জেলার আভ্যন্তরীন কালিগঙ্গা, ধলেশ্বরী, ইছামতি নদীতে পানি অনেকটা স্থিতিশীল রয়েছে। একারণে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। পদ্মা ও যমুনা নদীতীরবর্তী হরিরামপুর ও দৌলতপুর উপজেলার ২১ টি ইউনিয়নের মধ্যে ১৮ টি ইউনিয়নের অধিকাংশ বাড়িতেই পানি ঢুকেছে। অধিকাংশ রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন স্থানে সড়ক ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হযে পড়েছে।

এছাড়া শিবালয়, ঘিওর, সাটুরিয়া উপজেলার অর্ধেকেরে বেশি বাড়িতে পানি উঠেছে। এছাড়া গত তিনদিনে মানিকগঞ্জ সদর ও পৌর এলাকায় পানি ঢুকেছে। জেলা শহরের বেশিরভাগ পাকা ও কাঁচা সড়ক পানিতে ডুবে গেছে। পানি ঢুকে পড়েছে বহু বাড়িঘরেও। সবমিলিয়ে, সিংগাইর ছাড়া জেলার অন্য ৬ টি উপজেলার কয়েকলাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, যমুনা নদীর পানি আরিচা ঘাট পয়েন্টে সামান্য কমলেও তা এখনো বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

মানিকগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী বেল্লাল হোসেন বলেন, পানি বৃদ্ধির ফলে মানিকগঞ্জ পৌরসভার ১০ টি সড়কের ১২ কিলোমিটার এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে ৩ টি সড়কে এখনও ঝুকি নিয়ে গাড়ি চলাচল কররেও অন্য সড়কগুলোয় যোগাযোগ বিছ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন,বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ২৮ কোটি টাকা ব্যায়ে দুটি প্যাকেজে একটি বক্সকালভার্টসহ ২৮ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হয়েছে মাস খানেক আগে। হঠাৎ বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়া ১২ কিলোমিটার সড়কের কার্পেটিং ও খোয়া উঠে যাবে যা সংস্কার করতে খরচ হবে প্রায় দশ কোটি টাকা।

সরেজমিন দেখা গেছে, পানিবন্দি মানুষেরা ঘরের ভেতর মাচা তৈরি করে থাকছেন। গবাদিপশুগুলোকে পাকা সড়কে এবং উচুস্থানে রাখা হযেছে। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি, রান্নার জ্বালানী, খাবার সংকট। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে নারী ও শিশুদের পায়খানা ও প্রস্রাব করা। আসন্ন কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে যারা গরু মোটাতাজা করেছেন তারাও সমস্যায় পড়েছেন। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় এবং বেশ কিছু গরুর হাটে পানি উঠে গরু কেনা-বেঁচা কমে গেছে।

জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস বলেন, এই পর্যন্ত বন্যার্তদের মাঝে ১৩০ মেট্রিকটন চাল ও ১৭০০ প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হযেছে।

Facebook Comments Box
ভাগ