কবি ডাঃ মোঃ আবুল হাসান ১৯৬২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মানিকগঞ্জ জেলার অন্তর্গত ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী ইউনিয়নের ভুবনেশ্বর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মোঃ হারুনূর রশীদ ও মাতা মোসাঃ খাদিজা খাতুন। কবির প্রথম প্রকাশনা ‘তন্দ্রা হারার বেদনায়’ (২০১৫), দ্বিতীয় ‘তন্দ্রা হারা এ হৃদয়’ (২০১৬), তৃতীয় ‘তন্দ্রা হারা এ আঁখি’ (২০১৭), চতুর্থ ‘তন্দ্রা বতীর সাধনায়’ (২০১৮) এবং পঞ্চম ‘তন্দ্রা সুখের ঠিকানায়’ (২০১৯) প্রকাশিত কবিতাগুচ্ছ পাঠকের হৃদয়ে দোলা দিয়েছে।
এসবের মাধ্যমে একটি বিষয়ের উপর কবির এক হাজার কবিতা প্রকাশ পেয়েছে। কবি আবুল হাসান নিরন্তর খুঁজে ফিরছেন প্রাণপ্রিয়া ‘তন্দ্রা’-কে। ‘তন্দ্রা’-কে অনুসন্ধান করছেন কৌতুহলী পাঠকরাও। কবির আহত হৃদয়বীণার করুণ ঝংকার দরদী পাঠকের মনের মণিকোঠায় ঝড় তুলে দিচ্ছে। কবির সার্থকতা এখানেই। বেদনার নোনা জলে কবি-পাঠক ভিজে যেন চুপসে যাচ্ছেন। আবার প্রাপ্তিসুখে উভয়েই উড়ে যাচ্ছেন অচিনপুরের আনন্দ নিকেতনে।
দুই
তিনি প্রেমের কবি। তিনি বিরহের কবি। বেদনার কবি, বিচ্ছেদের কবি। কবি তিনি যাতনার। কবি কল্পনার, স্বপ্নের। তিনি অনুভব করেন হৃদয় দিয়ে। চোখের দেখাই তাঁর কাছে সব নয়। তিনি কল্পলোকের কবি। তাইতো ক্রমাগত আঁকতে পারেন মন মাতানো শব্দের ছবি। বাস করেন তিনি মনুষ্য সমাজে। সবই করেন তিনি। সবাই তা দেখেনও। কিন্তু থেকে যায় দেখার বাইরে অনেক কিছুই। কবির নরম মনের গোপন কুঠুরীতে একবার ঢু মারতে পারলেই হলো! বর্ষার তুলতুলে পলির মতো বেরিয়ে আসে সব। কবি বলতে চান। হঠাৎ তাকান ওপাশে। পাষানের দল লাফাতে থাকে। এক্কেবারে চুপ। সব কথা বলতে নেই কবির। কবির জিজ্ঞাসা- কেন? সব যে পুড়ে ছাই হয়ে যাবে! হোক, আমি বলবই বলব। আমি কবিতা লিখবো। পাখিরা, লতারা, আকাশ, পাহাড়, নদী, সমুদ্র পড়বে আমার কবিতা। ওরা বুঝবে আমার ব্যাথা। তাতেও কি আপত্তি? না, কবি।এতে আর আমরা কি করবো? তবে সাবধান কবি। ওরাও যেন তোমার কষ্টের কথা সবটা না জানে। জানলে পৃথিবী যে বদলে যাবে। পারবে সামাল দিতে? সাজানো ফুলবাগান দাবানলে ছারখার হয়ে যাবে। থাকবে শুধু ভস্ম।
তার চেয়ে ঢেড় ভালো নয়কি বাগানে ফুল ফুটতে দেওয়া? ফুলের যত্ন করা? ফুলের ঘ্রাণ নেওয়া? আলতো ডগা ধরতে গেলেই ছিড়ে যাবে যে! বুঝেছো কবি, পাষান স্তুপের প্রশ্ন। হ্যাঁ, বুঝেছি। তোমরা জানতেই পারবে না আমার কবিতার, আমার কল্পনার মানবীকে। কখনো না, কোনোদিন না।
বলছিলাম কবি ডাঃ মোঃ আবুল হাসানের কথা। তবে পাঠকবৃন্দ, কবির সাথে কবিতাকে মেলাতে যাবেন না। তাহলে মস্ত বড় ভুল হবে। হিসাব মিলবে না। কবির সাথে ছবির আর ছবির সাথে কবির মিল করানোর চেষ্টা নিছক বোকামি। আমরা কবির পানে চেয়ে থাকবো। তাঁর সৃষ্টির অপেক্ষায় প্রহর গুনবো। কবি এ বিশ্বে বিরল প্রতিভার একজন। শুধু স্বপ্নলোকের রাজকন্যাকে নিয়ে মন ভরে লিখে চলেছেন। একজন দূরবাসিনীকে নিয়ে এক হাজার কবিতা লেখা অসম্ভব না হলেও চাট্টি খানি কথা নয়। কবি ডাঃ মোঃ আবুল হাসান এ দুরূহ কাজটি করেছেন। যা বিশ্ব সাহিত্যে বিরল।
কবির জন্য শুভ কামনা রইলো অন্তর হতে। কবি, আপনি সুস্বাস্থ নিয়ে দীর্ঘজীবি হউন। আরো প্রেমের, বিরহের, ব্যাথার কবিতা বেরিয়ে আসুক আপনার কলম হতে, আপনার উর্বর চিন্তালোক হতে। আমরা আপনাকে ভালোবাসি বড় বেশি! আপনি মানিকগঞ্জের গর্ব, দেশের গর্ব। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও আপনি পৌছে যাবেন একদিন। জয়তু কবি ডাঃ মোঃ আবুল হাসান।
শ্যামল কুমার সরকার : সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, ইংরেজি বিভাগ, ঝিটকা খাজা রহমত আলী কলেজ, হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ।
কড়চা/ এস কে এস