বাবা দিবসে মানিকগঞ্জে অনলাইন আলোচনা সভা

বিমল চন্দ্র রায় : রোববার (২০ জুন) বিশ্ব বাবা দিবস উপলক্ষে মানিকগঞ্জে অনলাইন আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। মানিকগঞ্জ স্মৃতি ফাউন্ডেশন এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন নবগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নারীনেত্রী লক্ষী চ্যাট্যার্জ্জি।

অনলাইন আলোচনায় অংশ নেন অর্থোপেডিক্স বিশেষজ্ঞ ডা: পংকজ কুমার মজুমদার, পরিবেশবাদী ও মানবাধিকারকর্মী এ্যাডভোকেট দীপক কুমার ঘোষ, শিশু সংগঠন খেলাঘর এর সাবেক সংগঠক ও সমাজকর্মী কমল শিকদার, সাবেক বামছাত্র নেতা মধুসূদন সাহা, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম চপল, কৃষি ও অর্থনীতিবিদ ড:গয়ানাথ সরকার, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব শিক্ষক মজিবর রহমান, ছাত্রনেত্রী রুমি আক্তার, সমাজকর্মী ইকবাল খান, সমাজ সংগঠক রাশেদা আক্তার, শাহিনুর রহমান, সত্যসাহা, মুক্তার হোসেন।

আলোচকবৃন্দ বলেন, বাবা-মাকে সন্মান করতে হবে। পাশাপাশি নিজস্ব নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা যাতে বার্ধক্য সময় অন্যের মুখাপেক্ষী থাকতে না হয়। মা-বাবার ভরনপোষন আইন আছে, সেই আইন দিয়েই বাবা-মা’র প্রতি সন্তানের দায়িত্ব পালনের বাধ্য করা যাবে। তবে বাবা-মা’র প্রতি সন্তানের ভালোবাসা বাড়াতে হবে, পাশাপাশি বাবা-মাদেরও সন্তানকে সুশিক্ষিত হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। কারণ লেখাপড়া করলেই সুশিক্ষিত হয় না, তাকে সহনশীল ও পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।

এ্যাডভোকেট দীপক ঘোষ বলেন, আমার বাবা কখনও অন্যায়কে প্রশ্রয় দেন নাই। তবে আমি বা আমার ভাইয়েরা কোন অন্যায় করলে আমাদেরকে শাসন করতেন। মনে করি এই শাসন আমাদের কাজে লেগেছে।

গয়ানাথ সরকার বলেন, আমি খুবই ছোট বয়েসে আমার বাবাকে হারিয়েছি। আমার কাছে বাবার স্মৃতি শুধুমাত্র ছবি। কিন্তু আমি এখন বাবা। আমি আমার সন্তানসহ একত্রে বসবাস করি। পরস্পর সন্মানের সম্পর্ক আছে। আমি মনে করি, প্রত্যেকের নিজের জায়গা থেকে পরস্পর সন্মানের সম্পর্ক রাখার মধ্য দিয়েই বাবা দিবসের স্বার্থকতা।

রাশেদা আক্তার বলেন, আমার বাবা প্রতিদিন কয়েক মাইল দূর হতে আমার বাসায় এসে আমার সন্তানকে লালন পালন করেন। তিনি যদি না আসতেন তা হলে হয়তো আমার চাকরি করা সম্ভব হতো না ।

রুমি বলেন, আমার বাবা আমদের যথেষ্ট স্বাধিনতা দিয়েছিলেন, তাই আমি বিভিন্ন সামাজিক রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে পারিপার্শ্বিক বাধার পরও করতে পেরেছিলাম।

শফিকুল ইসলাম চপল বলেন, পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতার কারণে সমাজে পিতা-মাতার প্রতি বৈষম্য বিরাজমান।

কলিকাতা নিবাসি মধুসূদন সাহা বলেন, বাবা-মাকেই তাদের নিরাপত্তাবলয় গড়ে তুলে রাখতে হবে।

কমল শিকদার বলেন, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও দায়িত্ববোধই বাবা দিবসকে স্বার্থক করতে পারে।

সঞ্চালক বিমল চন্দ্র রায় বলেন, আমার বাবা আমাদের সকল ভাই-বোনকে লেখাপড়া শিখিয়েছেন। আমার বাবার সাথে সর্ম্পক ছিল বন্ধুত্বপূর্ণ। তিনি নিজস্ব আর্থিক নিরাপত্তাবলয় গড়ে তুলে নিজের ও আমার মায়ের পরনির্ভরশীলতা হতে মুক্ত থেকেছেন। তিনি আরো বলেন, আমার স্ত্রীর বাবা অর্থ্যাৎ আমার শ্বশুর দীর্ঘ চার বছর প্রতিদিন ২০ কিলোমিটার যাতায়াত করে আমার দুই সন্তানকে দেখাশুনা করেছেন। কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি তাকে।

সভাপতির বক্তব্যে লক্ষী চ্যাটার্জ্জি বলেন, আমার বাবা আমাদেরকে সমতা শিখিয়েছেন এবং প্রতিবেশীদের প্রতি আমাদের দ্বায়িত্ব ও সহর্মমিতা শিখিয়েছেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সদস্য সচিব বিমল চন্দ্র রায়।

সকল বাবার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ও পরস্পর সম্প্রীতির বন্ধনে পরিবার গড়ে উঠুক এই প্রত্যাশায় জানিয়ে আলোচনা সভা শেষ হয়।

কড়চা/ বি সি আর

Facebook Comments Box
ভাগ