মাসুম বাদশাহঃ মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার চান্দহর ইউনিয়নের দক্ষিণে নিলাম্বর পট্টি-নবাবগঞ্জের শোল্লার সংযোগস্থলে কালিগঙ্গা নদীর ওপর ব্রীজের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে প্রায় দেড় বছর আগে। কিন্তু ব্রীজের উত্তর পাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় ৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ব্রীজটি অব্যবহৃত অবস্থায় রয়েছে।
এদিকে, জটিলতা কাটিয়ে এলজিইডি’র অর্থায়নে ৬ কোটি ১ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা ব্যয়ে ব্রীজের সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু হলেও দেখা দিয়েছে নতুন সমস্যা। ওই সড়কের পূর্ব পাশে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে চান্দহর, সায়েস্তা ও চারিগ্রামসহ তিন ইউনিয়নে যাতায়াতের জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি। পালপাড়া মান্নানের দোকান হতে ফতেপুর হয়ে নিলাম্বর পট্টির রাস্তাটি শোল্লা-সাহরাইল-সিংগাইর ও চারিগ্রাম রাস্তার সংযোগস্থলে মিলিত হয়েছে। কার্পেটিং ও ইট সলিংসহ ৩ কি.মি. এ রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন শত শত যানবাহন ও স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীসহ হাজারো মানুষের যাতায়াত।
এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার (৮ জুলাই) সরেজমিনে দেখা যায়, শোল্লা ব্রীজের নির্মাণাধীন সংযোগ সড়কের কারণে নিলাম্বর পট্টি-পালপাড়া রাস্তায় প্রবেশ ও বহিঃগমণ বন্ধ হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। রাস্তাটি বন্ধ হয়ে গেলে এ এলাকার হাজারো মানুষের যাতায়াতে দুর্ভোগের সীমা থাকবে না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। তারা জানান, সিংগাইর উপজেলার চান্দহর ইউনিয়নের ১২৬ নং শোল্লা মৌজার ব্যক্তি মালিকানার জায়গার ওপর জনচলাচলের জন্য নিলাম্বর পট্টি খেয়াঘাট থেকে আধা কিলোমিটার রাস্তা পাকা করেন পার্শ্ববর্তী নবাবগঞ্জ উপজেলার শোল্লা ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান কিসমত। পরবর্তীতে দু‘উপজেলার সংযোগস্থলে কালিগঙ্গা নদীর ওপর ব্রীজ নির্মাণ করা হলে সংযোগ সড়ক নির্মাণে জমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। নবাবগঞ্জ এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, নতুন করে জমি অধিগ্রহণ না করে পূর্বের চলমান রাস্তার ওপর দিয়েই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডার্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড ব্রীজের সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু করেছে। চলমান সংযোগ সড়কটির কাজ সম্পন্ন হলে নিলাম্বর পট্টি-ফতেপুর-পালপাড়া সড়কটির চেয়ে প্রায় ২০ ফুট উঁচু হবে সংযোগ সড়কটি। ফলে রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
চান্দহর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শওকত হোসেন বাদল অভিযোগ করে বলেন, যেভাবে পরিকল্পনা ছাড়া ব্রীজের সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে তাতে গুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তাটি অচিরেই বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি রাস্তাটি সচল রাখার জোর দাবী জানান।
এ প্রসঙ্গে ব্রীজের সংযোগ সড়ক নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডার্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের দায়িত্বে থাকা সাইট ইঞ্জিনিয়ার খাদিমুল বলেন, রাস্তার প্রবেশ ও বহিঃগমণ বন্ধের কোন সুযোগ নেই। আমরা ব্রীজের সংযোগ সড়কের সাথে ওই রাস্তায় চলাচলের উপযোগী করে দিব।
নবাবগঞ্জ এলজিইডি’র উপসহকারি প্রকৌশলী মোঃ শওকত হোসেন বলেন, ব্রীজের সংযোগ সড়ক ও নিলাম্বর পট্টি-পালপাড়া রাস্তা দুটিই এলজিইডি’র আওতাধীন। পার্থক্য শুধু জেলা। রাস্তাটি যাতে বন্ধ না হয় সে বিষয়ে দু’জেলার প্রকৌশল অফিসের সাথে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা প্রকৌশলী মুহাম্মদ রুবাইয়াত জামান বলেন, ইউএনও, এসিল্যান্ডসহ আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ রাস্তাটি যাতে বন্ধ না হয় সে জন্য ডিসি স্যারকে লিখিত ভাবে অবগত করা হয়েছে।
কড়চা/ এম বি