কড়চা ডেস্কঃ আমাদের সকলেরই কখনো না কখনো হেঁচকি বা হিক্কা (hiccups) হয়েছে। এক দুবার হলে কিছু মনে না হলেও একটানা হতে থাকলে বিরক্তির উদ্রেক করে। এখানে আমরা জানব হেঁচকি ওঠে কেন আর একটানা হেঁচকি হলে তা বন্ধ করার উপায় কি।
মুখ থেকে শব্দটা সৃষ্টি হলেও এর শুরুটা কিন্তু শরীরের বেশ কিছুটা নীচের অংশ থেকে হয়। আমাদের বুক আর পেটের মাঝখানে মাংসপেশি দিয়ে তৈরি একটা বাঁকানো দেয়াল বা পার্টিশন আছে, যার নাম ‘ডায়াফ্রাম’ বা মধ্যচ্ছদা। এই ডায়াফ্রাম একটি নির্দিষ্ট ছন্দে প্রসারিত ও সংকুচিত হয়। এই ডায়াফ্রাম যখন সংকুচিত হয় তখন ফুসফুসে বায়ু প্রবেশ করে এবং প্রসারিত হলে বায়ু বেরিয়ে যায়। স্বাভাবিক ছন্দে ডায়াফ্রাম কাজ করার ফলেই আমাদের প্রশ্বাস নিঃশ্বাস ক্রিয়া স্বাভাবিক ছন্দে কাজ করে। কোনো কারণে স্বাভাবিক ছন্দ নষ্ট হয়ে ডায়াফ্রামে যদি হঠাৎ করে খিঁচুনি বা স্প্যাজম হয় তখন অতিরিক্ত বায়ু কন্ঠনালীতে প্রবেশ করে স্বরযন্ত্রে আঘাত করে, ফলে হেঁচকির শব্দ ওঠে।
ডায়াফ্রামের সংকোচন-প্রসারণের স্বাভাবিক ছন্দ বজায় রাখতে সাহায্য করে ‘ফ্রেনিক নার্ভ’ নামে এক বিশেষ ধরনের স্নায়ু। কোনও কারণে ফ্রেনিক নার্ভ উত্তেজিত হলে ডায়াফ্রামের সংকোচন-প্রসারণের স্বাভাবিক ছন্দ ব্যাহত হয়। এছাড়া অন্যান্য কিছু শারীরিক কারণেও ডায়াফ্রামের এই ছন্দ ব্যাহত হয়। হেঁচকি ওঠার বেশ কিছু সাধারণ কারণ হল-খুব দ্রুত খাবার খেলে, অনেকক্ষণ ধরে কাঁদলে বা হাঁসলে, মানসিক উদ্বেগ, উষ্ণতার হঠাৎ পরিবর্তন এবং অতিরিক্ত মদ্য পান বা সোডা জল পান করলে।
একটানা হেঁচকি হলে তা বন্ধ করার কিছু টোটকা আছে যেমন-পানি পান করা, জিহ্বা বের করা, জিহ্বার তলায় চিনি রাখা, নাক মুখ বন্ধ করে রাখা, হঠাৎ চমকে যাওয়া এবং কাগজের ঠোঙ্গায় নাক মুখ রেখে শ্বাস নেওয়া
তবে যদি কারোর একটানা নিয়মিত হেঁচকি হতে থাকে তবে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ হেঁচকি অনেক সময় স্নায়বিক রোগ, বিপাকের সমস্যা, টিউমর বা সিস্ট ইত্যাদির উপসর্গ হিসাবেও হতে পারে।