ভুয়া টিভি চ্যানেল ও পত্রিকার মালিক সেজে কোটি টাকা লুট, গ্রেপ্তার দুই

কড়চা ডেস্কঃ একটি ফ্ল্যাটে ঝুলছে ৫ টি গণমাধ্যমের সাইনবোর্ড। সাপ্তাহিক সময়ের অপরাধ চক্র, ইন্টারভিউ, দৈনিক অপরাধ বাংলা, রিয়েল ক্রাইম, এবি টিভি এমন বাহারী সব নামের পেছনে পাতা ছিল প্রতারণার জাল। গণমাধ্যমের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে চাকরি দেয়ার নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার আভিযোগে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ‘নিউজ ২১ টিভি’ এবং ‘এবি চ্যানেল’-এর মালিক মো. শহিদুল ইসলাম ও ‘সাপ্তাহিক সময়ের অপরাধচক্র’-এর মালিক আমেনা খাতুন। ওই দুটি অফিস থেকে বিপুল পরিমাণ ভুয়া নিয়োগপত্র ও জাল সিল জব্দ করা হয়েছে। পরে অফিস দুটি সিলগালা করেন র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। আদালত পরিচালনা করেন র‌্যাব-৩ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু।

মঙ্গলবার (০১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর পুরানা পল্টনে একই ফ্ল্যাটে খোঁজ মেলে এমন পাঁচটি প্রতারক প্রতিষ্ঠানের। সিলগালা করে দেয়া হয়েছে সেই কার্যালয়। এসময় র‌্যাব কর্মকর্তারা বলছেন, অনুমোদনহীন টিভি চ্যানেল ও পত্রিকার সাইনবোর্ড ব্যবহার করে ১০ থেকে ১২টি সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার প্রলোভনে প্রায় এক হাজার বেকার যুবকের কাছ থেকে আড়াই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।

অভিযানে আরো মেলে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জাল সিল ও সই। এছাড়া সাংবাদিকের তকমা বিক্রি হতো ৫ হাজার টাকায়। র‌্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, এবি চ্যানেল ও নিউজ-২০ টিভি যার কোনো সরকারি অনুমতিপত্র নাই। এই অফিস মূলত চালের আড়তের জন্য নেয়া হয়েছিল। একে অন্যের ঘাড়ে দায় চাপানোর চেষ্টা করেন অভিযুক্তরা।

অভিযান শেষে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, অনুমোদনহীন টিভি চ্যানেল ও পত্রিকার সাইনবোর্ডে স্বাস্থ্য বিভাগ, কারিগরি ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, বিআইডাব্লিউটিএ ও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোতে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করে চক্রটি এক হাজার বেকার যুবকের কাছ থেকে প্রায় আড়াই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সরকারি ওই প্রতিষ্ঠানগুলোতে যখন আসল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হতো, তখন চক্রটি তাদের অফিসের ঠিকানা দিয়ে নিজেদের মতো করে বিজ্ঞপ্তি দিত। তাদের দালাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বেকার যুবকদের টার্গেট করত। এমনকি তারা স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের যুগ্ম সচিবের সিল জালিয়াতি করে নিয়োগপত্র দিত।

Facebook Comments Box
ভাগ