সিংগাইরে প্রভাবশালীদের ঘের, মৎস্যজীবিদের দুর্দিন

মাসুম বাদশাহ : “জাল যার জলা তার” মৎস্যজীবিদের এ অধিকারের ব্যত্যয় ঘটেছে। জাল ও নৌকা নিয়ে মাছ ধরতে না পেরে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন মৎস্যজীবিরা। প্রভাবশালীদের দেয়া ঘের ও নিষেধাজ্ঞার কারনণ বন্ধ হয়েছে রুটি রোজগারের পথ। এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার চান্দহর ইউনিয়নের রিফায়েতপুর, ওয়াইজনগর ও চালিতাপাড়া চকে।

রিফায়েতপুর গ্রামের ফেলু খা ছোট বেলা থেকেই মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করলেও এ বছর মাছ শিকারের বিশাল এলাকা ঘের দিয়ে আটকে দেয়ায় তিনি এখন ভাড়ায় নৌকা চালানোর পথ বেছে নেন। একাধিক ঘেরের কারণে ওয়াইজনগর জেলেপাড়াসহ আশপাশের অনেক মৎস্যজীবিই কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।

সরেজমিন নৌকাযোগে ওই চকে গিয়ে দেখা যায়, মৎস্যজীবি ইদ্রিস (৩৫) ও আব্দুর রহমান (৫০) নৌকা-জাল নিয়ে ঘেরের বাইরে বসে আছেন। তারা অভিযোগ করে বলেন, ঘের মালিকদের বাঁধার কারণে মাছ ধরতে না পারায় আর্থিক সংকটে আছেন তারা । রিফায়েতপুর-চালিতাপাড়া চকে প্রায় ১ বর্গকিলোমিটার প্লাবন ভূমি নেট দিয়ে আটকে দিয়েছেন রিফায়েতপুর গ্রামের সিদ্দিক খা, বাদশাহ, কফিল শিকদার, আতাউর রহমান মাস্টারসহ ৪০-৫০ জনের একটি গ্রুপ। তারা কয়েকটি পুকুর বন্ধক নিয়ে পুরো রিফায়েতপুর চালিতাপাড়া চক দখল করেছেন । তার উত্তর-পশ্চিম পাশে ওয়াইজনগর গ্রামের মৃত আলম চান্দের পুত্র আবুল হোসেন গং এস আলম দিঘি মৎস্য খামার নামে প্রায় আরো ২ বর্গকিলোমিটার পানিতে নিমজ্জিত জমি অনুরূপ বাঁধ দিয়ে আটকে দিয়েছেন। আর ওই বিশাল এলাকায় মাছ ধরার জন্য কাউকেই প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। সেই সঙ্গে আলগীটেক চকের বিশাল এলাকায় মাছ ধরতে বাঁধা দিচ্ছেন ওয়াইজনগর চকবাড়ি এলাকার নাজিম উদ্দিন, চানু, কদম আলী ও জামাল গং।

অভিযুক্ত আতাউর রহমান মাষ্টার মাছ ধরতে বাঁধা দেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, ঘেরের বাইরেওতো অনেক জায়গা আছে। জেলেরা ইচ্ছে করলে সেখান থেকে মাছ ধরতে পারে।

এস আলম দিঘি মৎস্য খামারের মালিক আবুল হোসেন জানিয়েছেন, তার দেয়া বাঁধ পানিতে ডুবে যাওয়ায় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। তাই ওই এলাকায় বড় ফাসযুক্ত জাল দিয়ে মাছ ধরতে নিষেধ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে সিংগাইর সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ওয়াহিদুল আবরার বলেন, ঘের দেয়া অবশ্যই অন্যায় কাজ। অতিদ্রুত মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে ঘের অপসারণসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কড়চা/ এম বি

Facebook Comments Box
ভাগ