মানিকগঞ্জে ব্যক্তিগত আয়োজনে দুর্গাপূজা নজর কেড়েছেন নারী উদ্যোক্তা কৃষ্ণা সরকার

কড়চা ডেস্ক : সাধারণত আমাদের দেশে পূজা উদযাপন হয়ে থাকে স্থানীয় পূজা মন্ডপ পরিচালনা কমিটি কিংবা সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্যোগে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে এমন আয়োজন অনেকটাই দুঃসাধ্য। এই কঠিন কাজটি সফলভাবে করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন মানিকগঞ্জের নারী উদ্যোক্তা কৃষ্ণা সরকার।

কৃষ্ণা সরকার মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার সরুপাই গ্রামের একজন অনলাইন ব্যবসায়ী। তিনি অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে শাড়ীসহ নানা ধরনের জিনিস বিক্রি করে নারী উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। তাঁর স্বামী রতন বিশ্বাস একজন ব্যবসায়ী। স্বামীর সহযোগিতায় কৃষ্ণা সরকার এবার তাঁদের বাড়িতে আয়োজন করেছেন দুর্গাপূজা। প্রতিমা বানানো থেকে শুরু করে পূজা আয়োজনের সবই করেছেন তিনি। একজন নারীর এমন আয়োজন দেখতে প্রতিদিনই ভীড় করেছেন বিভিন্ন বয়সী শতশত নারী-পুরুষ। আগত সকলের আপ্যায়নের জন্য ছিলো খিচুরি, বিভিন্ন ধরনের লাড়ু, সন্দেশ ও ফলমূল। যার যেটা পছন্দ তিনি সেটি দিয়েই আপ্যায়ন করেছেন। খালি মুখে কেউ যেতে পারেননি।

একজন নারীর এমন একটি বড় আয়োজনের বিষয়ে জেলা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট দীপক কুমার ঘোষ বলেন, নবগ্রাম ইউনিয়নের সরুপাই গ্রামের রাজেন্দ্রপুর কৃষ্ণা সরকারের উদ্যোগে আয়োজিত দুর্গাপুজা পরিদর্শনে গিয়ে খুশি হয়েছি। একজন নারীর উদ্যোগ ও ব্যবস্থাপনা এত বড় একটি উৎসবের আয়োজন নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। কারণ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে মা দুর্গা শক্তির প্রতীক এবং অশুভ শক্তি বিনাশের দেবী। একই সাথে তাঁর আগমনে পৃথিবী ফুলে-ফলে-ফসলে ভরে ওঠে। এটাকে নারীর ক্ষমতায়নের প্রতীক হিসেবেও ধরে নেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে নারী পুরুষের সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে কৃষ্ণা সরকারের এই উদ্যোগ অন্যান্য নারীদের ভেতরে ছড়িয়ে পড়ুক এ প্রত্যাশা রাখি।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসরাফিল হোসেন বলেন, আমি কৃষ্ণা সরকারের বাড়িতে আয়োজিত দুর্গাপূজা পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। খুব ভালো লেগেছে। পূজা দেখতে আসা সকলকে আপ্যায়ন করিয়েছেন। এটা খুবই ব্যয়বহুল ও কষ্টসাধ্য। এটি তিনি সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন। আগামীতে এই ধরনের আয়োজনে আমরা তাঁর পাশে থাকবো।
মানিকগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব সাহা বলেন, এবার জেলায় মোট ৫৭৪ টি পূজা মন্ডপে দুর্গা পূজার আয়োজন করা হয়। এরমধ্যে ২২৬টি স্থায়ী মন্দিরে এবং ৩৫০টি অস্থায়ী মন্দিরে আয়োজন করা হয়েছে। অস্থায়ী মন্দিরে পূজা আয়োজনে সরকারি ও স্থানীয়দের সহায়তা থাকে। স্থানীয়দের আর্থিক সহায়তা ছাড়া এতো বড় আয়োজন করা কঠিন। একারণে কৃষ্ণা সরকার বাড়তি ধন্যবাদের দাবীদার।
সব কিছুকে ছাপিয়ে এই পূজা আয়োজনের বিশেষ বড় দিক হচ্ছে সকলের জন্য আপ্যায়ন। আয়োজক কৃষ্ণা সরকার আগামীতেও এমন আয়োজন করতে চান। তিনি এবং তাঁর স্বামী রতন বিশ্বাস সকলের আশীর্বাদ প্রার্থনা করেছেন।
কড়চা/ জেড এ বি
Facebook Comments Box
ভাগ