সুরেশ চন্দ্র রায়ঃ মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার তেওতা ইউনিয়নের যমুনা নদীতে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ড্রেজার বসিয়ে অবাধে বালু ব্যবসা করছেন কতিপয় ড্রেজার ব্যবসায়ী। এতে নদীর পারের বেরিবাঁধসহ বাড়িঘর ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
তেওতা ইউনিয়নের মালুচি গ্রামের এক ব্যক্তি বলেন, তেওতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে জানিয়েছিলাম, কিন্তু কোন লাভ হয়নি। কারণ চেয়ারম্যান নিজেই এ ড্রেজার ব্যবসার সাথে জড়িত। তবে কিছুদিন আগে শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসে কয়েকটি ড্রেজারের পাইপ ধংস করেছে। তিনি চলে যাবার কিছু সময় পর তারা আবার ড্রেজারের পাইপ মেরামত করে দিব্যি মাটি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন । এ দৃশ্য দেখে মনে হয়, এ যেন প্রশাসন আর ড্রেজার ব্যবসায়ীদের ভাঙ্গা গড়ার খেলা। তিনি আরো বলেন, জেল জরিমানা ও কঠোর শাস্তি ছাড়া শুধু পাইপ ভেঙে ড্রেজার ব্যবসা কখনো বন্ধ হবে না।
জাফরগঞ্জ এলাকার আরেক বাসিন্দা মজিবর রহমান বলেন, সরকার আমাদের ভিটে মাটি রক্ষায় এ বেরিবাঁধ করে দিলেও এই সকল ড্রেজারের কারণে এই বেরিবাঁধ এখন হুমকির মুখে। ড্রেজারের কারণে বর্ষাকালে এ বেরি বাঁধ ভেঙ্গে যাবার আশংকা রয়েছে। আমরা স্থায়ীভাবে ড্রেজার বন্ধের বিষয়ে উপজেলায় বহুবার গিয়েছি। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি কিছুই। এ কারণে আমরা এখন তিক্তবিরক্ত হয়ে গেছি।
স্থানীয় এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আমাদের এখন এইচএসসি চলছে। রাতে পড়তে বসলে এই ড্রেজারের শব্দে পড়তে পারি না। কাকে বলবো আমরা? উপজেলার কর্মকর্তা এসে এক দিন ড্রেজার ভেঙ্গে দেয় পরের দিন আবারও চলে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিবালয় উপজেলার তেওতা বাজার থেকে জাফরগঞ্জ বাজার পর্যন্ত যমুনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। তবে অধিকাংশ ড্রেজার রয়েছে মালুচি পেয়ারা বাগান এলাকায়। এদের মধ্যে আবুল হোসেন, আব্দুল হালিম, সাম, রেজা, মুক্তার, মানিক, মুন্না, আরিফ, নান্নু, আজগর, ফরহাদ, শুভ্র, হাফিজুল, মোমিন ও জিয়ার নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
শিবালয় উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন সুলতানা বলেন, নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের কোনো সুযোগ নেই। কিছুদিন আগে আমি অভিযান চালিয়েছিলাম। কিন্তু ড্রেজারের মালিক খুঁজে পাইনি। সম্প্রতি জানতে পেরেছি তারা পুনরায় ড্রেজার বাণিজ্য শুরু করেছে। আমি অবশ্যই এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
কড়চা/ এস সি আর