এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়

পরিবারের সদস্যদের সাথে ইকবাল হোসেন খান

মধুসূদন সাহা

যার কথা বলছি, তিনি যৌবনের আগেই যুদ্ধ গিয়েছিলেন। যুদ্ধে যুদ্ধে জীবন অতিবাহিত করেছেন। কখন‌ও সশস্ত্র,কখনো নিরস্ত্র। কখন‌ও নিয়মতান্ত্রিক, কখনও তথাকথিত রাষ্ট কাঠামোকে চ্যালেঞ্জ করে। জীবন বাজী রেখে যুদ্ধ করার কথা শুনেছেন। নষ্ট রাজনৈতিক নেতৃত্বের মুখে যা অহরহ শুনা যায়। কিন্তু সাচ্চা রাজনৈতিক যোদ্ধা হাতে গোনা। তিনি তাদের‌ই একজন। তিনি আমাদের, জাসদের, মানিকগঞ্জের, সারাদেশের ইকবাল ভাই। প্রগতিশীল আন্দোলন ও গণমুক্তির সংগ্রামে আজীবন যোদ্ধা ছিলেন। আজ তার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। তাতে উৎসর্গকৃত এই পংক্তিমালা।

নষ্ট সমাজ ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় উচ্ছিষ্ট ভোগকারী পরগাছা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব‌ও মৃত্যুর পর গণআদালতে বিচারের পরিবর্তে প্রচারের আলোতে আসেন। কিন্তু ইকবাল ভাইয়ের স্মরন সম্পূর্ণ ভিন্ন। কারণ তিনি স্কুল জীবন থেকে পরাধীনতা বিরোধী ছাত্র রাজনীতি করেছেন, মুক্তি যুদ্ধে সম্মূখ সমরে যুদ্ধ করেছেন। নীতির প্রশ্নে যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ক্ষমতার মোহকে ত্যাগ করে প্রবল স্রোতের বিপরীতে মুষ্টিমেয়তে কয়েকজন মানুষ ক্ষমতার দম্ভের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন তিনি ছিলেন তার সামনের সারিতে। রাজনৈতিক প্রক্রিয়া রুদ্ধ হ‌ওয়ার পর আবার সশস্ত্র সংগ্রাম। অনেকে বিপ্লবের ধ্বজাধারীরা এর মধ্যে হঠকারিতা খোঁজেন। উনারা কিন্তু আদর্শকে বগলদাবা করে, ক্ষমতার মুড়ি চিবুতে চিবুতে পদ্মার ভাটির নৌকায় নিজেদের উৎসর্গ করেছিলেন। আর উজান বেয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করেছিলেন ইকবাল ভাইরা। এবার বলুন, কোনটি সুবিধাবাদী আর কোনটি বৈপ্লবিক কর্মকাণ্ড।

ইকবাল ভাই স্মরনযোগ্য আর‌ও বিবিধ কারণে। সামাজিক ও প্রগতিশীল আন্দোলনের পুরোধা, নীতির প্রশ্নে আপোষহীন, দলবদলের বিষাক্ত প্রক্রিয়ায় অনুপস্থিত, ক্ষমতার হাতছানিকে উপেক্ষা। সর্বোপরি ইকবাল ভাই ছিলেন আজীবন প্রগতিশীল আন্দোলনের পুরোধা। লোভ তাকে কুলষিত করতে পারেনি,ভয় তাকে পদঙ্খলন করতে পারেনি, শুধুমাত্র জ্বরার কাছে তিনি পরাজিত। তাই আজীবন বিপ্লবীর শিরোপা তার মস্তকে। এগুলো কথার কথা নয়। আত্মউপলব্দি করলেই আমরা বুঝতে পারবো।
লাল সালাম।

Facebook Comments Box
ভাগ