শিবালয়ে জমি আর ঘর পাচ্ছেন অসহায় মানিকজানরা

মারুফ হোসেন : অনেক বছর আগে এক দুরারোগ্য আক্রান্ত হয়ে মারা যান স্বামী সামসুল আলম। পরে পাঁচ সন্তান নিয়ে অভাব-অনাটনে কষ্টে দুঃখে কোন মত জীবন পার করছিলে ষাটোর্ধ মানিকজান বেগম। পরে পাঁচ সন্তানের মধ্যে চার জন মারা যান। এরপর অভাব-অনাটন আর দুঃখের মাঝে হানা দেয় সর্বনাশী যমুনার ভাঙ্গন। বাড়ি-ঘর নদীতে বিলিন হয়ে যায়। আশ্রয় নেন পার্শবর্তী মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার ফলসাটিয়া এলাকার ভাইয়ের বাড়ি। কোন মতে একটি ঝুপড়ি ঘরে এক ছেলেকে নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন মানিকজান বেগম। স্বামী হারা অসহায় ছেলেকে নিয়ে অন্যের বাড়ি কাজ করে খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকা দুষ্কর হয়ে পরে। সেখানে নিজের একটি বাড়ি ও ঘর করা তার কাছে স্বপ্নের মত ছিল। এর মাঝেই স্বপ্ন ধরা দেয় তাকে। প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের আবাসন প্রকল্পে শিবালয় উপজেলা প্রশাসন তার নাম তালিকাভূক্ত করে নেয়।

মানিকজানের মত অসহায় ভূমিহীন ও গৃহহীন ২০ টি পরিবারের মাথা গোজার ঠাঁই মিলছে শিবালয় উপজেলার উথুলী ইউনিয়নের নদীশুকা এলাকায় খাস জমির উপর নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্পে। এখানে অসহায় পরিবারগুলো দুই শতাংশ জমির উপরে আধুনিক সুয়োগ-সুবিধা সমন্বয়ে একটি পাকা ঘর পাচ্ছে। থাকছে দুইটি রুম, একটি রান্নার রুম, টয়লেট, গভীর নলকূপসহ বিদ্যুতের ব্যবস্থা।

সুবিধাভোগী মানিকজান বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, হেই ছোট বেলা থেকে কষ্ট কইরা আসতেছি। জীবনের সব হারায়ছি। আমি গরিব মানুষ, আমার নিজের একটা বাড়ি ওইবো তা কোনদিন ভাবিইনি। শেখের বেটি হাসিনা আমাগো মাথা গুজার ঠাঁই কইর‌্যা দিল। আল্লাহর কাছে দোয়া করি তারে আরো দিন বাচায়া রাহে।

শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিএম রুহুল আমীন রিমন জানান, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ভুমিহীন ও গৃহহীনদের আবাসন প্রকল্পে শিবালয়ে ২১ টি পরিবার এ ঘর পাচ্ছে। ইতিমধ্যে সুবিধাভোগীদের মাঝে জমির নামজারিসহ হস্তান্তর করা হয়ে গেছে। আর ঘরের কাজ শেষ পর্যায়ে। আগামী ২০ জানুয়ারি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফান্সের মাধ্যেমে সারা দেশের ন্যায় আনুষ্ঠানিক এ আশ্রয়ন প্রকল্প উদ্বোধনের কথা রয়েছে। উপজেলায় ক শ্রেণিভূক্ত ৩৪১ জনের মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে ২১ জনকে প্রাথমিক ভাবে এ ঘর প্রদান করা হয়েছে।

শিবালয় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার সুদে রায় বলেন, প্রতিটি ঘর নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছে এক লক্ষ একাত্তর হাজার টাকা। কাঠামোর গুণগত মান ঠিক রেখে ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছে।

কড়চা/ এম/ এইচ

Facebook Comments Box
ভাগ